বুধবার   ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   মাঘ ২৩ ১৪৩১   ০৬ শা'বান ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪৭৩

হিন্দু মহাজোট

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৩  

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবীতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে মানববন্ধ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দীনবন্ধু রায় এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, সিনিয়র সহ সভাপতি অ্যাডঃ প্রদীপ কুমার পাল, প্রেসিডিয়াম মেম্বার অভয় কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ প্রতিভা বাকচী, যুগ্ম মহাসচিব নকুল কুমার মন্ডল, দপ্তর সম্পাদক কল্যাণ মন্ডল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ অচ্যুতানন্দ ঘরামী, প্রচার সম্পাদক বিপ্লব মিত্র, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী মিল্টন বিশ্বাস, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি প্রদীপ শঙ্কর, নির্বাহী সভাপতি গৌতম সরকার অপু, সাংগঠণিক সম্পাদক তাপস বিশ্বাস রাজিব, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, প্রকাশনা সম্পাদক বিধান সরকার
অর্থ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক প্রশেষিত হালদার, কল্পন মৃধা, প্রমুখ। সভায় বক্তাগণ বলেন, দেশে বিভিন্ন সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন সহ নানা কারনে দেশের হিন্দু
সম্প্রদায় দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। ফলে দেশ হিন্দু শুন্য হওয়ার পথে। অথচ সংখ্যালঘু সমস্যা সমাধানে জাতীয় সংসদ সর্বদাই নিরব ভূমিকা পালন করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্যা নিরসনে তাদের কোন ভূমিকা নাই। অর্থাৎ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার মত কোন সাংসদ জাতীয় সংসদে নেই। ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল ও ৭২ এর সংবিধান ফেরতের দাবীতে গড়ে উঠা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবী পুরণ না হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান সরকার ক্ষমতা  গ্রহণের পর তারা তাদের একমাত্র দাবী থেকে সরে এসে ভোল পাল্টিয়ে " সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” নামে দুটি দাবী নিয়ে হিন্দু সমাজকে বিভ্রান্ত করছে, ব্লাকমেইল করছে। হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ এদেশের
হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্যা সমাধান করতে চায় না, তারা মূলতঃ হিন্দু সমস্যাকে জিইয়ে রেখে নিজেদের সুযোগ সুবিধা আদায় করতে সর্বদা ব্যস্ত। তাই হিন্দু স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত থাকায়
হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সংগঠনটি নিষিদ্ধের জন্য মানববন্ধ থেকে জোড়ালো দাবি উঠে। একটি সমাজকে সুরক্ষার জন্য যা যা আইন দরকার, সেসব আইন বিদ্যমান আছে। রাজনৈতিক কারনে সেসব আইন বাস্তবায়ন হয় না। দেশে মানবাধিকার কমিশনও আছে। অতীতেও বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সময় বহু কমিশন হয়েছে। কিন্তু সে সব কমিশনের ফলাফল শূন্য। ১৯০৯ সালে অবিভক্ত ভারতে মুসলিম সম্প্রদায় পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা দাবী করেছিলো। তাদের যৌক্তিক দাবীর প্রেক্ষিত বৃটিশ সরকার ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনে পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করেন। পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থা অব্যাহত ছিল। পূর্ব পাকিস্থান প্রাদেশিক পরিষদে সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে ৭২ টি আসন সংরক্ষিত ছিল। যার মধ্যে হিন্দু ৬৯, বৌদ্ধ ২, ও খৃষ্টান সম্প্রদায় ১ জন প্রতিনিধি সরাসরি নির্বাচিত করতে পারতেন। পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্থানী শাসক গোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী মানষিকতার ফলে সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থা সুকৌশলে তুলে নেয়। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূনঃ প্রতিষ্ঠার দাবী এখন জাতীয় দাবীতে পরিণত হয়েছে। যেহেতু দেশের হিন্দু সম্প্রদায় স্বাধীনতার আগে থেকেই সকল নির্বাচনে নিঃস্বার্থ ও একচাটিয়াভাবে আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়ে সরকার গঠনে সহযোগীতা করে আসছে সে কারনে হিন্দু সম্প্রদায় আশা করছে বিশ্বস্ততার প্রতিদান হিসাবে বর্তমান সরকার আগামী সংসদ অধিবেশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবী "জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত  আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূণঃ প্রতিষ্ঠ্য়া"র বিল উত্থাপন করবে ও পাশ করবে।
আগামী নির্বাচনের পূর্বে সরকার যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য " জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূনঃ প্রতিষ্ঠ্য়া"র বিল উত্থাপন না করে এবং সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষিত  আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করে তাহলে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ভোট বর্জনের মত কর্মসূচী নিতে বাধ্য হবে। 

এই বিভাগের আরো খবর