সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১১২

লালমনিরহাট নাসিং কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২২  

লালমনিরহাট নাসিং কলেজটি চালুর পর থেকে অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

কলেজ হস্তান্তরের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকার মালামাল গ্রহণ না করা, ভুয়া ভাউচারে বিল উত্তোলন, কলেজ ভবনে চুরিসহ দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ওই অধ্যক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

২০১২ সালে কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৪ সালে সাড়ে পাঁচ একর জায়গায় ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলে উদ্বোধন ছাড়াই সেগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে প্রায় পাঁচ বছর। পরে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি এই কলেজে যোগদান করেন অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগম। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। কিন্তু কার্যক্রম শুরু হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকার মালামাল বুঝিয়ে নেননি অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগম এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থ বছরে একত্রিতভাবে এক কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার টাকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতর থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়। আর এ বরাদ্দের টাকা ব্যয়ে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। অতিথি শিক্ষকের নামে ভুয়া ভাউচার করে এক লাখ ২০ হাজার টাকার বিল উত্তোলন করা হয়। একইভাবে ক্যাবল, কম্পিউটার সরঞ্জাম, ওজন মাপার মেশিন, ডিএনসি সেট, সার্জিক্যাল ও মনোহারী পণ্য কিনতে ভুয়া ভাউচার ব্যবহার করে কয়েকগুণ বেশি মূল্য দেখানো হয়। অথচ পণ্য ক্রয়ে যে প্রতিষ্ঠানের ভাউচার ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

শুধু তাই নয়, কলেজের শিক্ষার্থীদের পোশাক তৈরির টাকা নিয়ে চলছে টালবাহানা। শিক্ষক ফনি ভূষণ যথা সময়ে টাকা বুঝিয়ে না দেয়ার অভিযোগ করে তাকে ওই অধ্যক্ষ শোকজ করেন। তবে গত আগস্ট মাসে অধ্যক্ষের নির্দেশে টাকা বুঝিয়ে দিলে আজও সে টাকা জমা হয়নি অফিসে।

বিসমিল্লাহ কম্পিউটার ও মাসুম স্টোর প্রতিষ্ঠান দুটির প্রতিনিধিরা জানান, বিলের ভাউচারে মালের যে দাম উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এতো দামে আমরা মাল বিক্রি করিনি। ভুয়া ভাউচার করেছেন তারা।

নার্স শিক্ষক ফনি ভূষণ সরকার বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলেই শিক্ষার্থীদের পোশাকের টাকা রেখেছিলাম। অথচ অধ্যক্ষ আমাকে বিনা দোষে এ ঘটনায় শোকজ করেন। আর আগস্ট মাসে পোশাকের টাকা জমা দিলে এখনো তা অফিসে জমা দেখানো হয়নি।

কলেজটির প্রভাষক ইউসুফ আলী বলেন, অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগম কলেজ হস্তান্তরের সময় থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এ সব বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই বদলিসহ নানা হুমকি দেন অধ্যক্ষ। কলেজ শুরুর সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে দেড় কোটি টাকার মালামাল গ্রহণ করেছে বলে কাগজে স্বাক্ষর করলেও তা বুঝে নেননি। শুধু তাই নয় কলেজ ভবনে যে চুরি হয়েছিল তা করানো হয়েছে। এখনো দুর্নীতি করে যাচ্ছেন তিনি।

অফিস সহকারী আরিফ আহমদ জানান, কিছু ভাউচার নিজেদের তৈরি করতে হয়েছে। কারণ অনেক খাতে খরচ দিতে হয়। অডিট আসলে তাদেরও টাকা দিতে হয়। এসব টাকা আমি কি নিজের পকেট থেকে দেব? যাতে নিজের পকেট থেকে টাকা দিতে না হয় তাই দাম একটু বেশি করে ধরা হয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগম বলেন, এসব বিষয়ে সংবাদ করার দরকার নেই। আমাদের নিজেদের বিষয় সবাই মিলে সমাধান করা হবে।

এই বিভাগের আরো খবর