সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৮ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪২০

মারেয় ১শ পাউন্ড দিয়েই শুরু রিচার্ড ব্রানসনের ব্যবসা সাম্রাজ্য

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২১  

মার্কিন শীর্ষ ধনী স্যার রিচার্ড ব্রানসনকে তার মা ইভ ব্রানসন ব্যবসা করতে মাত্র ১শ পাউন্ড দিয়েছিলেন। ব্যালে নর্তকী ছিলেন ইভ। ৯৬ বছরে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ইভ। চল্লিশের দশকে ব্রিটিশ সাউথ আমেরিকান এয়ার ওয়েজে এয়ার হোস্টেস ছিলেন তিনি। স্যার রিচার্ড ব্রানসন বলেন তার মা শুধু সন্তানদের কাছেই নয় ১১ জন নাতি-নাতনি ও ১০ জন পুতিদের কাছে ছিলেন তিনি গর্ব। মিডিলসেক্সের এডমনটনে ১৯২৪ সালের ১২ জুলাই ইভ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর মেজর রুপার্ট আরনেস্ট হান্টলে ফ্লিন্ডট এবং মা ডরথি কনসট্যান্স। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন ইভ। বালক বয়সে রিচার্ড ব্রানসনকে গ্লাইডারস হওয়া জন্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে ইভ রয়াল নেভাল সাভিসে যোগ দেন। ব্যালে নর্তকী হিসেবে এন্টারটেইনমেন্টস ন্যাশনাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশর মাধ্যমে জার্মানি ভ্রমণ করেন। এয়ার হোস্টেসের চাকরির সময় বিয়ে করেন এডওয়ার্ডস ব্রানসটনকে। এরপর ইভ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। মিলিটারি পুলিশ অফিসার হিসেবেও ইভ পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন প্রোবেশন অফিসার। এমনকি নভেল ছাড়াও শিশুতোষ বইও লিখেছেন ইভ। ১৯৫০ সালে তার কোল আলো করে জন্ম নেন রিচার্ড ব্রানসন। রিচার্ড বলেন তিনি তার মা’কে ছোট বেলায় অনবরত কোনো কোনো প্রকল্পে কাজ করতে দেখেছেন। উদ্ভাবনী, ভয়হীন ও ক্লান্তিবিহীন ছিল তার পথচলা। তার মায়ের অন্যতম সফল ব্যবসা ছিল কাঠের তৈরি টিস্যু বাক্স ও ওয়াস্টপেপার বিন তৈরি। আত্মজীবনীতে রিচার্ড বলেছেন নিত্য নতুন ব্যবসার ধারণা দিতে তার মা ইভ ছিলেন ধারাবাহিক উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী। উদ্যোক্তা বললে তাকে কম বলা হয়। ব্যবসার নতুন ধারণা ও তা বাস্তবায়নের মধ্যে নিজে অংশ নিতেন। এদিক থেকে তার ভূমিকা ছিল ঘূর্ণিপাকের মত। নিজে পণ্য তৈরি করেছেন, ব্যবসা নিয়ে কথা বলেছেন, পণ্য ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন, বিক্রি করেছেন। কেউ তার মত করেনি। এবং মায়ের হাত ধরেই আমি আমার বিশাল বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছি। মায়ের কাছ থেকেই উদোক্তা হওয়া শিখেছি। ষাটের দশকে মা একদিন রাস্তায় একটি নেকলেস পড়ে পেয়ে তা থানায় পৌঁছে দেন। তিন মাস পর্যন্ত ওই নেকলিসটির দাবি কেউ না করলে পুলিশ ইভকে তা ফিরিয়ে নিতে পারে। তারপর তা মা ওই নেকলেসটি লন্ডনে বিক্রি করে আমাকে ১শ পাউন্ড দেন। ওই অর্থ ছাড়া আমার পক্ষে ভার্জিনের মত কোম্পানি গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না। সারাজীবন ইভ শিশুদের কল্যাণে আইনী সহায়তা দিয়ে গেছেন। গড়ে তুলেছেন ইভ ব্রানসন ফাউন্ডেশন এবং তিনি তার পরিচালক ছিলেন। ২০১৩ সালে ৮৯ বছর বয়সে ইভ তার আত্মজীবনী ‘মামস দি ওয়াল্ড’ প্রকাশ করেন। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেনের বোর্ড অব ডিরেক্টরের সদস্য। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের লালন পালন করে এ সেন্টার। ২০১১ সালে ঘুমের মধ্যেই ইভের স্বামী টেড মারা যান। এর চার বছর পর ইভ জানান তিনি তখনো পুরুষ সঙ্গ লাভ করেন এবং তখন তার সঙ্গী তারচেয়ে ৪০ বছরের ছোট ছিল। নিয়মিত টেনিস, গলফ ও ক্রোয়েট খেলতেন ইভ। সারাজীবন অন্যকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘ব্যস্ত থাক এবং ব্যস্ত থাকার মত অজস্র সদিচ্ছা মনের ভেতরে ধরে রাখ।’

এই বিভাগের আরো খবর