রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৬ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৬৩

বন্যায় লাকসামে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন স্টুডেন্টস কমিউনিটি

রিয়াদ হোসাইন স্টাফ রিপোর্টারঃ

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২৪  

ভয়াবহ বন্যার কবলে কুমিল্লার ১৪টি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। বানের পানিতে সর্বহারা এসব মানুষের ভরসা এখন সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ। পানিতে সবগুলো সড়কে বুকপানি। ফলে সেসব এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোট। সেখানে ত্রাণ দেওয়ার জন্য কেউ গেলেই বুক পানি ডিঙিয়ে সেখানে হুড়মুড়িয়ে ছোটেন নারী-পুরুষ সবাই।


সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ডাকাতিয়া নদী বাঁধ ভাঙনকবলিত লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁও গেলে দেখা যায়, একটি দ্বিতল ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন অর্ধশতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু। 

ইঞ্জিনচালিত নৌকা কিংবা ট্রলারের শব্দ শুনেই একটু খাবার ও পানির আশায় ছুটে আসেন তারা। এ গ্রামের সব বাড়িতেই পানি। কেউ কেউ গেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। কেউবা আবার গ্রামের উঁচু ভবনে। তবে পুরুষদের কেউ কেউ পানিবন্দি হয়েই বাড়িতেই থেকেছেন মালপত্র রক্ষায়।


রাকিব তিনি তরুণ কন্ঠকে বলেন, ঘরে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব পানিতে তলিয়ে গেছে। ত্রাণের নৌকা থেকে খাবারের সঙ্গে চেয়ে নেন মশার কয়েল, দুই বোতল দুধ ও খাবার পানি।

রাব্বি তিনি জানালেন, শুকনো খাবার যা পাচ্ছেন, তা দিয়ে কোনোমতে চালিয়ে নিচ্ছেন। খাবার পানির অনেক সমস্যা। কয়েকদিন হলো রান্না করা খাবার পাইনি।

বন্যা পরিস্থিতিতে লাকসামে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন স্টুডেন্টস কমিউনিটি মনহরগন্জ্ঞ ও নাঙ্গলকোট থানায় বন্যার শুরু থেকে পানি বন্ধি মানুষদের শুকনা বার,রান্না করা খাবার,বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরঞ্জাম ও ঔষধ  দিয়ে যাচ্ছে "স্টুডেন্টস কমিউনিটি লাকসাম।" এর আগ থেকে ২১ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে বন্যায় আশঙ্কা থাকা মানুষ দের উদ্ধার কাজ করে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়।

ত্রাণের ট্রলারের শব্দে বুক সমান পানি ভেঙে ছুটে আসেন পাশের বেড়াজাল গ্রামের ইলিয়াস ও তার এক প্রতিবেশী নারী।

তারা জানান, এদিন (সোমবার) কোনো ত্রাণ পাননি তারা। দুই প্যাকেট ত্রাণ নিয়ে তারা ঘরে ফিরেছেন।

পাশের আজগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু। সেখানকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী কবির বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে টিউবওয়েল নষ্ট, ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও যা পানি পাই তা দিয়ে চলতে কষ্ট হয়। বাড়িতে ধান-চাল সব ফেলে এসেছি, বাড়ি ফিরে খাব কি? এ চিন্তায় ঘুম আসে না।’

এ আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন পাশের বাড়ির বাসিন্দা মমতাজ বেগম। তিনি বলেন, পানি আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। ঘর ভেঙে গেছে। একই বাড়ির তিন পরিবারের ১৩ জন এ আশ্রয়কেন্দ্রে আছি।

অফুলা বেগম বলেন, ‘আমরা বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি। এখন শুকনো খাবার যা পাই, তা দিয়ে কোনোরকম চলছি। চার দিন গোসল নাই। এটা জীবন?

এই বিভাগের আরো খবর