শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ১৭ ১৪৩১   ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৬০৩

ফুলকোচা ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের কাঁচা রাস্তার বেহাল দশা

শারমিন আক্তার, জামালপুর

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২১  

দেশ স্বাধীনের পর থেকে একটি পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখছেন জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ৮ নং ফুলকোচা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়ার  আংশিক গ্রামবাসী। আজও তাদের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেছে। সরকার বাড়ি মোড় থেকে মৌলভীবাড়ি ঘাট হয়ে সকাল বাজার রাস্তা শরিফ মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত।

তারা জানান আমাদের গ্রামের যোগাযোগের একটি মাত্র রাস্তা। যে রাস্তা দিয়ে আমরা হাজরাবাড়ী বাজারসহ মেলান্দহ উপজেলা এবং জেলা শহর জামালপুরে যাই। স্বাধীনতার পর থেকে এই গ্রামের রাস্তার উন্নয়ন বলতে আমরা দেখেছি কিছুদিন পর পর স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিজান রাস্তায় মাটি ফেলে সংস্কার করেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসতে না আসতেই সে সব মাটি কাঁদায় পরিণত হয়ে বড় বড় গর্ত  সৃষ্টি হয়ে  চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।আবার স্থানীয় মেম্বার নিজ দায়িত্বে সংস্কার করেন।

 গ্রামের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ও গ্রামবাসী যাতায়াতের রাস্তাটি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, উল্টো বেড়েছে জনদুর্ভোগ। প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তায় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। গতকাল (বুধবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রাস্তাটি কাঁদায় পরিণত হয়ে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন জেলা উপজেলা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও লাগেনি তেলিপাড়া গ্রামের উক্ত রাস্তাটিতে। ইতোমধ্যে অনেক অসূস্থ মানুষ দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না নিয়ে যেতে না পারায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই এলাকায় রাস্তা দুর্ভোগের কারণে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। গ্রামের কৃষক ফসল ফলিয়ে বাড়িতে আনা নেওয়া সহ হাট বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 

উপজেলার সকল গ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ কোনো বরাদ্দ দিয়ে কাজ চললেও এ রাস্তার বরাদ্দ না পাওয়ায় স্থানীয় দায়িত্বশীলদের অযোগ্যতাও দায়ী বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসিরা। প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গা ও কাঁচা রাস্তার কারণে প্রতিদিন যাতায়াতে কষ্ট হয় সাধারন গ্রামবাসির। একটু বৃষ্টি হলেই হয় জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে বৈশাখ মাসে ধান তোলার সময় দুর্ভোগের শিকার হয় কৃষকেরা। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা সহ উচ্চবিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। সড়কে কোন গাড়ি না চলাতে গ্রামবাসীরা আছেন চরম দুর্ভোগে। গ্রামবাসিরা আরো জানান, আমাদের গ্রামে বর্তমান অনেক প্রভাবশালী লোকও আছে তারা কাঁচা রাস্তাটির কারণে জনদুর্ভোগ দেখেও এড়িয়ে যায়। এইগুলো সংস্কারে এবং নাগরিক সুবিধা দিতে সরকারের কাছ থেকে যে সহযোগিতা প্রয়োজন, তা পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামবাসি ও ইউপি সদস্য মিজানের উদ্যােগে বার বার বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করা হলেও কোন অদৃশ্যর কারণে তা বরাদ্ধ পাওয়া যাচ্ছেনা।

গ্রামবাসীরা আরো বলেন, কয়েক বছর আগেই স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি'র প্রচেষ্টায় এ গ্রামটিতে বিদ্যুতের আওতায় আনেন। গ্রামবাসীরা মনে করেন এই জনবান্ধব সাংসদই তাদের গ্রামের রাস্তাটি পিচের রাস্তা করে পাকা করন করবেন। স্থানীয় সরকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর, স্থানীয় সাংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান কাঁচা রাস্তাটি পাঁকাপোক্ত করে গ্রামবাসিকে জনদুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করবেন এমনটিই আশা করেন তেলিপাড়া আংশিক গ্রামবাসী।

এ ব্যাপারে ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজান জানান, রাস্তাটিতে আমি কয়েকবার মাটি দিয়ে মেরামত করা হলো অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাছাড়া বর্তমান আ.লীগ সরকার জনবান্ধব সরকার, এই সরকারের আমলে প্রত্যন্ত অঞ্চল উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে ইনশাআল্লাহ্ অতি শীঘ্রই এই গ্রামের কাঁচা রাস্তা পাকা করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এই বিভাগের আরো খবর