রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৩২

পুরস্কৃত হলেন ২৬২ খ্রিস্টানের জীবন বাঁচানো সেই ইমাম

তরুণ কন্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০১৯  

নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপুলসংখ্যক খ্রিস্টানকে মৃত্যুর হাত থেকে সুরক্ষিত করেছিলেন মসজিদের এক ইমাম। সেদিন তার সেই সাহসী পদক্ষেপে ২৬২ খ্রিস্টান প্রাণে বেঁচে যায়। আর সেই কৃতিত্বের জন্য এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রথম আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করলেন সেই বৃদ্ধ ইমাম আবদুল্লাহি আবু বকর। তিনি ছাড়াও এ সম্মাননা দেয়া হয়েছে সুদান, ব্রাজিল, ইরাক ও সাইপ্রাসের চার ধর্মীয় নেতাকে। ইমাম আবদুল্লাহি আবু বকরের ঘটনাটি ছিল গত বছরের ২৩ জুনে আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ লেগে থাকা দেশ নাইজেরিয়ায়। সেদিন নাইজেরিয়ার ৮৪ বছরের এই বৃদ্ধ ইমাম নিজ বাড়ি ও মসজিদে ২৬২ খ্রিস্টানকে লুকিয়ে রেখে আশ্রয় দিয়ে সুরক্ষিত করেছিলেন।

ওই দিন প্লেটো রাজ্যের বারকিন লাদি অঞ্চলের ১০ গ্রামে উগ্রপন্থীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় সেসব গ্রামের দুই শতাধিক খ্রিস্টান কৃষক এসে জীবন বাঁচাতে স্থানীয় মুসলমানদের দ্বারস্থ হন। নিজের জীবনকে বাজি রেখে এগিয়ে আসেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম আবদুল্লাহি আবু বকর। তিনি হামলাকারীদের তোপের মুখে খ্রিস্টান কৃষকদের নিরাপত্তা দেন।

কিন্তু বিষয়টি জেনে যায় হামলাকারীরা। তারা আবদুল্লাহি আবু বকরের বাড়িতে এসে হাজির হয়। আবু বকর ঘরের বাইরে এসে হামলাকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। ইসলামের দৃষ্টিতে তারা ভুল করছেন জানিয়ে হামলাকারীদের বোঝান। এসব খ্রিস্টান কৃষকের জীবন রক্ষায় তাদের কাছে অনুরোধ করেন। একসময় তাদের জীবন রক্ষায় বিনিময়ের প্রস্তাবও করেন।

একপর্যায়ে হামলাকারীরা ইমামের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া ২৬২ খ্রিস্টানকে ছেড়ে চলে যায়। সেদিন আবদুল্লাহি আবু বকরের মানবতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও ইসলামের বাণীর কাছে মাথানত করেছিল এক উগ্রবাদী সংগঠন। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তির নজির গড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য মসজিদের ইমাম আবদুল্লাহি আবু বকরকে সম্মাননা দিল।

এ স্বীকৃতি লাভ ও সম্মানার জন্য আবদুল্লাহি আবু বকরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ বুহারি। তিনি তার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে দেশের সম্মান সুমহান করেছেন আবু বকর। তিনি যে বার্তা দিয়েছেন, প্রকৃত মুসলমান কখনও সন্ত্রাস ও হত্যাজজ্ঞ সমর্থন করে না।

প্রসঙ্গত বারকিন লাদিতে ওই সময় প্রায় ৮০ কৃষক উগ্রপন্থীদের আক্রমণে নিহত হন। সে রকম পরিস্থিতিতে আবু বকরের প্রচেষ্টায় ২৬২ খ্রিস্টানের জীবন রক্ষা হয়।