বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১০১

নেতাকর্মীদের মুক্তি-শিক্ষা কমিশনে প্রতিনিধি দাবি হেফাজতের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২  

নেতাকর্মী ও আলেমদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহারসহ জাতীয় শিক্ষা কমিশনে আলেমদের প্রতিনিধি রাখা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তানে কাজী বশীর মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে এ দাবি জানান হেফাজত নেতারা।

হেফাজতের মরহুম আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়ন, হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার, কারাবন্দি হেফাজতের নেতাকর্মীদের দ্রুত মুক্তির দাবি ও জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচনের প্রতিবাদে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘শাহ আহমদ শফী ঘোষিত হেফাজতের ১৩ দফা আন্দোলনে ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। আহমদ শফীর রেখে যাওয়া আমানত। একজন মুমিনের কাছে তার জানের চেয়েও ঈমান প্রিয়। অতএব দেশের প্রতিটি মুসলমানই হেফাজতের নেতাকর্মী বা সমর্থক। তাই যখনই মুসলমানের স্বার্থ সংরক্ষণের ডাক আসবে তখন দল-মত নির্বিশেষে, নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ওলামায়েকেরাম নবী রাসুলের (সা.) উত্তরসূরী। তাদের বন্দি রেখে দেশে শান্তি এবং স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দেশের এই ক্রান্তিকালে অশান্তি ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রথমত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন এবং তাদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে মজলুমদের কান্না বন্ধ করুন।’

সম্মেলনের প্রধান আলোচক সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। ২০১০ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হেফাজতের কোনো রাজনৈতিক ভিশন বা মিশন নেই। হেফাজত ইসলামের ১৩ দফা বাস্তবায়নের পক্ষে পূর্বের ন্যায় নিজেদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। ১৩ দফা হেফাজতের ঘোষিত এজেন্ডা। এর বাস্তবায়নের জন্য হেফাজত অতীততেও কাজ করে গেছে, আগামীতেও করবে।’


মামলার হাজিরার নামে হয়রানি বরদাস্ত করা সম্ভব নয় জানিয়ে হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে শুরু করে ২০১৬ ও ২০২১ সালেরসহ হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আলেম-ওলামাদের এভাবে হয়রানি করবেন না। তাদের এসব মামলার বেড়াজাল থেকে মুক্তি দিন। মামলা চালাতে চালাতে অনেকে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিন।’

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের শিক্ষানীতি নিয়ে বারবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘২০১১ ও ২০১৬ সালে শিক্ষানীতি নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফা রহ. এর বাধার মুখে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়। আমরা জানতে পেরেছি সেই ষড়যন্ত্র আবারও শুরু হয়েছে। এবার তারা ধর্মীয় শিক্ষার পরীক্ষাই বাতিল করে দিচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। যে বিষয়ে পরীক্ষা থাকবে না সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কীভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে। এটা ধর্মীয় শিক্ষাকে বাদ দেওয়ারই নামান্তর। আমরা এই ষড়যন্ত্র মেনে নিতে পারি না। আমরা কোনোভাবেই এ ধরনের জাতি ধ্বংসকারী সিদ্ধান্তকে মেনে নেব না। আমাদের দাবি অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষানীতি থেকে ইসলামবিদ্বেষী লেখাগুলো বাদ দিতে হবে এবং সব শ্রেণিতে ধর্মীয় শিক্ষার ওপর ১০০ নাম্বারে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সঙ্গে জাতীয় শিক্ষা কমিশনে ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়ার’ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’’

হেফাজতের নায়েবে আমির আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, ‘আমরা মাঠে নামবো। অনেক সময় বলা হয় হেফাজত অরাজনৈতিক দল, তারা মাঠে কেন নামবে। আমি বলি শিক্ষার্থী বা অনেকে তাদের দাবির জন্য মাঠে নামে। সেটা কি রাজনৈতিক আন্দোলন হয়ে যায়? রাজনৈতিক হয় না, তাহলে আমরা আমাদের দাবি নিয়ে নামলে রাজনৈতিক আন্দোলন হয়ে যায় কেন? ১৩ দফা আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দফা নেই।’

পরে সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। 

এই বিভাগের আরো খবর