শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ১৭ ১৪৩১   ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪৯০

দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীকে ৬ টুকরো করেন ফাতেমা

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২১  

রাজধানীর মহাখালী ও বনানী এলাকা থেকে একব্যক্তির ছয় টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় অপরাধীকে শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। দাম্পত্য কলহের জেরে অচেতন করে হত্যার পর, স্ত্রী নিজেই স্বামী ময়নার লাশ ছয় টুকরা করেছে  বলে জানিয়েছেন  ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) হারুন-অর-রশিদ।

মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

এর আগে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে সোমবার (৩১ মে) ময়নার প্রথম স্ত্রী ফাতেমাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিবির কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘দাম্পত্য কলহের জেরে ময়নাকে পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায় তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা। এসময় ময়না মিয়ার সঙ্গে ফাতেমার ধস্তাধস্তি হয়। আবারও পানি চাইলে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানি  খাওয়ানো হয় তাকে। লাশ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আমরা এ ঘটনার রহস্য উম্মোচন করতে সক্ষম হই। ঘটনায় অভিযুক্ত প্রথম স্ত্রীকে আমরা গ্রেফতার করি। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সব ঘটনা এবং দায় স্বীকার করেছেন। এরইমধ্যে সোমবার রাতে ময়না মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী একটি মামলা দায়ের করেছেন বনানী থানায়। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এ ঘটনার চার্জশিট দাখিল করবো।’

সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশিদ  বলেন, ‘স্বামী ময়না মিয়াকে যেন খুঁজে না পাওয়া যায়, সেজন্য গুম করার উদ্দেশ্যে  তার হাত-পা ও মাথা কাটা হয়। এ কাজটি করেন ফাতেমা নিজেই। ‌ হাত-পা ও মাথা কাটার পর তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গায় সেগুলো ফেলে দেন। শরীরের অংশ (দেহ) মহাখালী কাঁচা বাজারের পাশে মসজিদ গলিতে পাশে ফেলা হয়।   দুই হাত ও দুই পা মহাখালী বাস টার্মিনালে ফেলেন। আর মাথাটি পরবর্তীতে পলিথিনে করে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পাশে ফেলে দেন ফাতেমা।’

তিনি জানান, নিহত ময়না মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগের পর তদন্তে আমরা তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমাকে সন্দেহ করি। জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পাশ থেকে ময়নার মাথা  উদ্ধার করি।

ডিবি পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে প্রথম স্ত্রীর কলহ  ছিল। ফাতেমা বাসাবাড়িতে কাজ করে যে টাকা পেতেন তা স্বামীকে দিতে হতো। ময়না সেই টাকা অন্য মেয়েদের পেছনে খরচ করতো। মূলত এ কারণেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।   ফাতেমা জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দাদের জানান, স্বামীর সঙ্গে তর্কাতর্কি হলে একপর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন ময়না। এরপর থেকেই তিনি স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুনুর রশীদ বলেন, ‘এটি একটি বেদনা বিধুর ঘটনা। স্ত্রী তার হাজবেন্ডকে হত্যা করেছেন। এটি আসলেই রহস্যজনক। স্বামী ময়না মিয়াকে অচেতন করার পর জবাই করেন স্ত্রী নিজেই। রক্তমাখা শার্ট, দুই পাতা ঘুমের ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার পর একার পক্ষে  লাশ কোথাও স্থানান্তর করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, এ বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি মরদেহটি ৬ টুকরো করেন। বিভিন্ন জায়গায় লাশের টুকরোগুলো ফেলায় তার ধারণা ছিল, তাকে কেউ ধরতে পারবে না, গ্রেফতার করতে পারবে না। আরও তদন্তের পর বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।’

এই বিভাগের আরো খবর