শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৫৮

জুমার দিনের পাঁচটি বিশেষ ফযীলত

মুহাম্মদ বশির আহমাদ 

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার অন্যতম একটি বিষয় হল, এ দিন কালক্রমে সংঘটিত এমন কিছু মহাঘটনার নীরব সাক্ষী, যা পৃথিবীর মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বা পৃথিবীকে নবজীবন দান করেছিল। এমনিভাবে এ দিনই সংঘটিত হবে ঐ মহাপ্রলয়, যা এই নশ্বর পৃথিবীর সমাপ্তি ঘটিয়ে এক অবিনশ্বর জগতের সূচনা করবে। বদরী সাহাবী আবু লুবাবা ইবনে আবদুল মুনযির রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللهِ مِنْ يَوْمِ الْأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ، فِيهِ خَمْسُ خِلَالٍ: خَلَقَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَأَهْبَطَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَفِيهِ تَوَفّى اللهُ آدَمَ، وَفِيهِ سَاعَةٌ لَا يَسْأَلُ اللهَ الْعَبْدُ فِيهَا شَيْئًا إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُ، مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا، وَفِيهِ تَقُومُ السّاعَةُ، مَا مِنْ مَلَكٍ مُقَرّبٍ، وَلَا أَرْضٍ وَلَا سَمَاءٍ، وَلَا رِيَاحٍ وَلَا جِبَالٍ وَلَا بَحْرٍ، إِلّا وَهُنّ مُشْفِقُونَ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ.

নিশ্চয় জুমার দিন হল সমস্ত দিনের সর্দার। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে মহান দিবস। এমনকি এই দিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান।

জুমার দিনের বিশেষ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। এ দিন তাঁকে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এদিনেই আল্লাহ তাঁকে মৃত্যু দান করেছেন। জুমার দিন একটা সময় আছে, যাতে বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দান করবেন, যদি না সে হারাম কোনো বিষয়ের প্রার্থনা করে। তদ্রূপ, কিয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিনেই।

 

নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতারা পর্যন্ত  জুমার দিন (কিয়ামতের আশঙ্কায়) ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে। পৃথিবী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, পর্বত, সাগর সবকিছু জুমার দিন (কিয়ামতের আশঙ্কায়) উদ্বিগ্ন থাকে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ৫৫৫৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৫৫৪৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১০৮৪১

আরেক হাদীসে এসেছে, আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشّمْسُ: يَوْمُ الْجُمُعَةِ، فِيهِ خَلَقَ الله آدَمَ، وَفِيهِ أُهْبِطَ، وفيه مات، وَفِيهِ تِيبَ عَلَيْهِ، وَفِيهِ تَقُومُ السّاعَةُ، وَمَا مِنْ دَابَّةٍ إِلّا وَهِيَ مُصِيخَةٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، مِنْ حِينِ تُصْبِحُ حَتّى تَطْلُعَ الشّمْسُ شَفَقًا مِنَ السّاعَةِ، إِلّا الْجِنّ وَالْإِنْسَ، وَفِيهِ سَاعَةٌ لا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي، يَسْأَلُ اللهَ شَيْئًا، إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُ.

সূর্য যেসব দিন উদিত হয় অর্থাৎ দিনসমূহের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এদিন আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁকে দুনিয়াতে নামানো হয়েছে। এদিন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর তওবা কবুল হয়েছে। এ দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জিন ব্যতীত এমন কোনো প্রাণী নেই, যা কিয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটা সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামায আদায় করে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন। -মুআত্তা মালেক, হাদীস ২৯১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১০৩০৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১০৪৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ১৪৩০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৭৭২