সোমবার   ০৭ এপ্রিল ২০২৫   চৈত্র ২৪ ১৪৩১   ০৮ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৯

জমি জমার বিরোধের জেরে হামলা আহত ৪

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২৫  

পারিবারিক কলহ এবং জমিজমা নিয়ে মারামারি, ঝগড়া এবং একে অপরের ক্ষতি সাধন দেশের প্রতিটি এলাকার চিত্র যেন একই রকম। তবে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ঘটনাটি ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। এখানে বেআইনী জনতাবদ্ধে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করিয়া গুরুতর জখমসহ চুরি, ক্ষতি সাধন ও হুমকী প্রদানের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ইতিমধ্যে অপরাধ সংশ্লিষ্ট আর্থিক মূল্যসহ সর্বমোট- ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা ক্ষতি হয়েছে যা এখনো উদ্ধার হয়নি।

 

মূলত মোঃ খোরশেদ আলম ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন, গত ০১/০৪/২০২৫ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকার সময় ব্রাহ্মণপাড়া থানাধীন ২নং শিদলাই ইউপিস্থ শিদলাই সাকিনে বাদীর বসত বাড়ির উঠানের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি চলমান রয়েছে।

 

যার আইনের নাম ও ধারা ১৪৩/৪৪৭/323/324/325/307/379/427/506 এবং মামলাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ব্রাহ্মণপাড়া থানা, কুমিল্লা থেকে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাতের বাদী: মোঃ খোরশেদ আলম (৭৬), পিতা- মৃত জয়নাল হোসেন (জুনাব আলী), সাং- শিদলাই, ০৭ নং ওয়ার্ড, ২ নং শিদলাই উইনিয়ন, থানা- ব্রাহ্মণপাড়া, জেলা- কুমিল্লা।


বিবাদী: ১. ফখরুল আলম (৪০), পিতা- রফিকুল ইসলাম, ২. মোঃ জাকির মিয়া (৫০), ৩. রফিকুল ইসলাম (৭০), ৪. মোঃ হারুনুর রশিদ (৫০), সর্বপিতা- মৃত জয়নাল হোসেন, ৫.জহিরুল ইসলাম(৪১),পিতা-রফিকুল ইসলাম৬. মোঃ হাসান (২৮), পিতা- রফিকুল ইসলাম, ৭. মোঃ এমরান (২৫), পিতা- হারুনুর রশিদ, ৮. মোঃ আতিকুল রহমান (৪০), পিতা- মৃত জয়নাল হোসেন, ৯. ঝর্ণা বেগম(৫০), স্বামী-হারুন অর রশিদ, ১০। চম্পা বেগম (৪০), স্বামী জাকির হোসেন, সর্বসাং- শিদলাই, ওয়ার্ড নং-০৭, ২ নং শিদলাই, ইউনিয়ন, থানা- ব্রাহ্মণপাড়া, জেলা- কুমিল্লা।
সাক্ষীঃ ১. রেনু আরা বেগম, স্বামী- খোরশেদ আলম ২. স্বপ্না আক্তার, স্বামী- রফিকুল ইসলাম টুটল, ৩১ মোঃ আলামিন, ৪. মোঃ আলাউদ্দিন, ৫. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, সর্বপিতা- খোরশেদ আলম, সর্বসাং- শিদলাই ০৭ নং ওয়ার্ড, সর্বথানা- ব্রাহ্মণপাড়া, জেলা- কুমিল্লাসহ আরো অনেকে।

 

মোঃ খোরশেদ আলম এজাহারে বলেন, যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী মোঃ খোরশেদ আলম (৭৬), পিতা- মৃত জয়নাল হোসেন (জুনাব আলী), সাং- শিদলাই, ০৭ নং ওয়ার্ড, শিদলাই ইউপি, থানা- ব্রাহ্মণপাড়া, জেলা- কুমিল্লা থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে অভিযোগে বর্ণিত বিবাদীগণের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, ১নং সাক্ষী আমার স্ত্রী, ২নং সাক্ষী আমার মেয়ে এবং ৩, ৪ ও ৫নং সাক্ষী আমার ছেলে হয়। অভিযোগে উল্লেখিত বিবাদীগণ আমার ভাই ও ভাতিজা হন। বিবাদীগণের সাথে জমিজমা ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলমান রয়েছে।

 

এরই জের ধরে বিবাধীগণ আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রতি ক্রমাগত অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ০১/০৪/২০২৫ইং তারিখ দুপুর আনুমান ১২:৩০ ঘটিকার সময় ব্রাহ্মণপাড়া থানাধীন ২নং শিদলাই ইউপিস্থ শিদলাই সাকিনে আমার বসত বাড়ির উঠানে অভিযোগে বর্ণিত সকল বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হাতে ধারালো দা, লাঠি-সোটা নিয়া অনধিকার প্রবেশ করে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করিলে আমি সহ ১, ২ ও ৩নং সাক্ষী গালমন্দের প্রতিবাদ করায় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ১নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা কাঠের রোল দিয়া আমার স্ত্রী ১নং সাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে সজোরে মাথার মাঝ বরাবরে বারি মারলে তিনি হাত দিয়ে ফিরাইতে গেলে তার বাম হাতের কব্জি ভেঙ্গে গুরুত্বর জখম হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে গেলে অপরাপর বিবাদীরা তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি মারধর করে নীলাফুলা জখম করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

 

আমার মেয়ে ২নং সাক্ষীকে ৯ ও ১০ নং বিবাদী চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং ২নং বিবাদী হত্যার উদ্দেশ্য কাঠের বাটাম দিয়ে বারি মারিলে উক্ত বারি ২নং সাক্ষীর ঘাড়ে ও কোমরে লেগে মারাত্মক জখম হয়। ১, ৩ ও ৫নং বিবাদী ৩ ও ৪নং সাক্ষীকে এলোপাথারী ভাবে কিল-ঘুষি মারিয়া, লাঠি-সোঠা দিয়া পিটাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। ১ ও ৬নং বিবাদী আমাকে স্বজোড়ে ঘুষি মারিয়া মাঠিতে ফেলে লাঠি দিয়া এলোপাতারি মারধর করে। ১ নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা ধারালো ডেগার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য আমাকে গাই মারিলে উক্ত গাই আমার পিঠের মধ্যে লাগিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। পরবর্তীতে সকল বিবাদীগণ তাহাদের সাথে থাকা লাঠি-সোঠা দিয়া পিটাইয়া আমার বসত ঘরের টিনের দরজা-জানালা, ভাঙ্গিয়া প্রায় ১,০০,০০০/- (একলক্ষ) টাকা ক্ষতিসাধন করে।

 

৭ নং বিবাদী আমার মেয়ের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন যার আনুমান মূল্য ১,০০,০০০/- টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। আমাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ও সাক্ষীগণ এগিয়ে এলে বিবাদীগণ পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে হুমকি দেয় যে, আমরা যদি থানায় অভিযোগ করি বা মামলা করি তবে আমাদের একা পেলে প্রাণে মেরে ফেলবে।

 

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমি ও আমার আহত স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য যাই। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের পরামর্শে আমাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। আমি চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শে থানায় আসতে কিছু বিলম্ব হয়েছে।


উক্ত ঘটনার বিষয়ে অভিযোগে বর্ণিত অভিযুক্ত বিবাদীগণের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি বিনীত অনুরোধ করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করেছেন। যেন ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা করতে কেউ সাহস না পায়।

এই বিভাগের আরো খবর