রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৩০

গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সনাতনী ও গতানুগতিক: শামসুল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক  

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২২  

প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবে গ্যাসের দাম প্রায় ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কমিশনের দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত ‘সনাতনী ও গতানুগাতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম।

তিনি বলেছেন, বিইআরসি গতানুগতিক ও সনাতনী পদ্ধতি অবলম্বন করে মূল্যহার বৃদ্ধির আদেশ দিয়ে দিলো। বিইআরসি আক্ষেপের জায়গাটা আরও শক্ত করলো।
রোববার (৫ জুন) বিকেলে প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন মূল্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। নতুন এ দাম ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাগো নিউজকে তিনি এসব কথা বলেন।

গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর ১১৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের পর থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছিল ক্যাব। গত ২১ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করে বিইআরসি। সে সময় গ্যাসের মূল্য না বাড়িয়ে বরং কমানোর প্রস্তাব করেন এম শামসুল আলম।
কীভাবে গ্যাসের দাম কমানো যায় তার পক্ষেও যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি।

শুনানির দিন উত্থাপিত প্রস্তাবের বিষয়ে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আমরা দাম না বাড়িয়ে যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা বিইআরসি গ্রহণ করেনি। কেন গ্রহণ করেনি সে ব্যাখ্যাও তারা দেয়নি। ব্যাখ্যা দিলে তাদের বিশ্লেষণে তারা প্রকাশ করতো। আমার প্রতিক্রিয়া একটাই। তারা ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকিতে মূল্যহার বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। ভোক্তা পর্যায়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বাড়ালো। আর আমরাও ওই একই ভর্তুকিতে প্রস্তাব করেছি যে, মূল্যহার কীভাবে কমানো যায়। এই দুটো ব্যাপক পার্থক্যের জায়গাটায় আমাদের সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত। আমরা সে জায়গাটাই খতিয়ে দেখছি।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আমরা বলেছি গ্যাস সাপ্লাই চেনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে অযৌক্তিক ব্যয় দেখিয়েছে, সে অযৌক্তিক ব্যয় এবং লুণ্ঠন বৃদ্ধির কারণেই ঘাটতি বেড়েছে। সেই ঘাটতি সমন্বয়ের জন্য ভর্তুকি বৃদ্ধি বা মূল্যবৃদ্ধি না করে ভর্তুকি বৃদ্ধির প্রবণতা কমানো এবং মূল্যহার বৃদ্ধি না করার পরামর্শ দিয়েছি। মুনাফা নিয়ন্ত্রণ করা, সরকারের রাজস্ব নিয়ন্ত্রণ করা। এসব বহুমুখী পদক্ষেপের কথাই আমরা বলেছিলাম। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিইআরসি ব্যয় যৌক্তিক করতে চায় না। লুণ্ঠনমূলক ব্যয় প্রতিরোধ করতে চায় না। এগুলো তাদের আদেশে অব্যাহত থাকছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের এই উপদেষ্টা বলেন, বিইআরসির মূল্যবৃদ্ধির আদেশ ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারে না। এখানে ভোক্তাদের স্বার্থ ভয়ংকর রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোক্তাদের জ্বালানি অধিকার বিপন্ন হয়েছে। জ্বালানির যে নিরাপত্তা সেটাও অনিশ্চিত হচ্ছে, যদি এই অবস্থা অব্যাহত থাকে।

এর আগে গণশুনির দিনে ‘এ ধরনের শুনানিতে আর আসব না। আমরা বললে কিছু হচ্ছে না’, বলে আক্ষেপ করেছিলেন ক্যাবের এই উপদেষ্টা।
সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আজ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে বিইআরসি সেই আক্ষেপের জায়গাটা বড় বেশি শক্ত করে দিলো। আক্ষেপটাকে প্রতিষ্ঠিত করলো।

এই বিভাগের আরো খবর