বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১   ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৯০

ক্ষতি কাটাতে সহজ শর্তে ঋণ চান টেক্সটাইল মালিকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২৪  

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে টেক্সটাইল মালিকরা অনভিপ্রেত ব্যবসায়ীক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে জানিয়ে এ খাতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়াসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। দাবি সংবলিত চিঠি বুধবার (৩১ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মোহাম্মদ আলীকে দিয়েছে সংগটনটি।

বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকনের সই করা চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২ সপ্তাহের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখার ক্ষেত্রে যদিও সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব ছিল না তথাপি আমরা বেশ কিছু অনভিপ্রেত ব্যবসায়ীক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।

সংগঠনটি বলছে, যথাসময়ে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে না পারা, বাজার বন্ধ থাকায় স্থানীয় মিলগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারা ও রপ্তানিমুখী সময় গণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না। ফলে মিলগুলি মারাত্মক আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। গত দুই সপ্তাহের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে মিলগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি অর্থাৎ প্রচ্ছন্ন রপ্তানিখাতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্রয়াদেশ বাতিল উৎপাদন হ্রাস পাওয়া, মিলগুলোতে শ্রমিকদের অনুপস্থিতি, সাপ্লাই চেইন কাঁচামাল না পাওয়াসহ সব মিলিয়ে টেক্সটাইল শিল্পের মালিকরা ভয়াবহ কঠিন সময় অতিক্রম করছে।

জুলাই মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের সময় সন্নিকটে জানিয়ে সংগঠনটি তিনটি দাবি জানিয়েছে। দাবির মধ্যে রয়েছে- বর্তমানের কঠিন পরিস্থিতি বিশেষভাবে বিবেচনায় নিয়ে প্রত্যেক মিলের চলতি মাসের বেতন সর্বোচ্চ ২ শতাংশ সুদ হারে ১ বছর মেয়াদে ব্যাংক থেকে লোন হিসাবে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। চলতি জুলাই মাসের গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সুবিধার্থে একই সুদ হারে (২%) এক বছর মেয়াদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

ক্রমাগত লোকসানে থাকা প্রচ্ছন্ন রপ্তানিমুখী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি সমূহের পক্ষে এ মুহূর্তে মেয়াদী ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে এমতাবস্থায় সব মেয়াদী ঋণের কিত্তিসমূহ আগামী ৬ মাসের জন্য সুদবিহীন করে কিস্তি পরিশোধ স্থগিত রাখার দাবি জানান হয় চিঠিতে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি বিটিএমএ’র সদস্যভূক্ত মিলগুলো কর্তৃক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে সরবরাহকৃত ইয়ার্ন ও ফেব্রিকের বিপরীতে তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের সংশ্লিষ্ট এলসি প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ কর্তৃক এক্সপেক্টেড বিল যথাসময়ে পরিশোধের বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।

বিলের অর্থ প্রাপ্ত হলে সদস্য মিলগুলি তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সংকট থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, কোনো প্রণোদনার আবেদন করছি না। ঋণ ধারাবাহিকভাবে এক বছরের মধ্যে মালিকরা পরিশোধ করবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিটিএমএর সদস্য মিলগুলো বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে নিট খাতের প্রয়োজনীয় সুতার প্রায় ৯০ শতাংশ এবং উইভিং এ ৪৫% সরবরাহ করছে। এছাড়াও ডেনিম, হোম টেক্সটাইল ও টেরি টাওয়ালের শতভাগ দেশীয় চাহিদা পুরণ করে রপ্তানি আয়ে ব্যাপক অবদান রাখছে।

গত প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে প্রিয় মাতৃভূমি এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা সমূহ অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য, নাশকতা ও আগুন সন্ত্রাসের কারণে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের প্রাণহানী হয়েছে। দেশের এই কঠিন সময়ে সরকার সীমাহীন ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলায় বলিষ্ঠ এবং যথার্থ পদক্ষেপকে বিটিএমএ সমর্থন জানায়।

এই বিভাগের আরো খবর