শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৬৭

ঈদে সুস্থ থাকতে ৭ পরামর্শ

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০১৯  

আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আনন্দে দিনটি উদযাপন করছেন। এক মাস রোজা রাখার পর এই দিনে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার খাওয়া হয়। কিন্তু সবই খেয়ে ফেলা কিন্তু ভালো ফল বয়ে আনবে না। স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আপনাকে অতিভোজনের লোভ সংবরণ করতে হবে। রমজান মাসের দীর্ঘ শিডিউল শেষে শরীরের নিজেকে খাপ খাওয়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তাই হঠাৎ করে অতিভোজনে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার বদহজম ও পেটফাঁপা হতে পারে এবং ওজন বেড়ে যেতে পারে। ঈদে সুস্থ থাকতে ৭ পরামর্শ জেনে নিন।

* হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন
হ্যাঁ, আপনি ঠিক শুনেছেন। হাঁটলে বা ব্যায়াম করলে আপনি সতেজ, শিথিল ও সুখ অনুভব করবেন। কিভাবে? ভালো হাঁটা ও ব্যায়ামে ভালো-অনুভব হরমোন নিঃসরিত হয়, যা আপনার মেজাজের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া এটি রোগ দূরে রাখে ও আপনাকে অধিক শক্তিপূর্ণ অনুভবে সাহায্য করে। ঈদের সময় বিরিয়ানি অথবা অন্যান্য খাবারজনিত অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে।

* প্রথমে শাকসবজি খান
আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসের সর্বোত্তম উপায় হলো প্রথমে শাকসবজি খাওয়া। শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও আঁশ থাকে, যা আপনাকে পেটভরা অনুভূতি দেবে, যার ফলে উচ্চ ক্যালরি ও চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। একবাটি সালাদ দিয়ে আপনার খাবার শুরু করুন। প্রথমে শাকসবজি খেলে নানারকম স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমে।

* সীমিত পরিমাণে খাবার খান
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের বাড়িতে অতিভোজন করবেন না। উৎসবের অজুহাত দেখিয়ে অতিভোজন করা উচিত নয়। কারণ এটি ডায়েটের ওপর প্রভাব ফেলে আপনার স্বাস্থ্যকে বিপথে পরিচালিত করবে। খাবার খাওয়ার জন্য আপনাকে জোর করা হতে পারে, কিন্তু আপনার করণীয় হলো সকল খাবারের মধ্যে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর আইটেমটি অল্প পরিমাণে খাওয়া। খাবার নষ্ট করবেন না- প্রয়োজনে অতিরিক্ত প্লেট দিতে বলুন। খাবার কম খাওয়ার জন্য একটি কার্যকর উপায় হলো আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের সঙ্গে কথাবার্তায় মনোযোগ দেওয়া। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আমরা বাঁচার জন্য খাই, খাওয়ার জন্য বাঁচি না।

* কোমল পানীয় পান করবেন না
ভারী খাবার খাওয়ার পর হজমের জন্য কোমল পানীয় পান ভালো আইডিয়া মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা আপনি যা চিন্তা করছেন তা থেকে ভিন্ন। কোমল পানীয়তে প্রচুর চিনি থাকে এবং এটি আপনার শরীরের কোনো উপকার করে না। ভালো হজমের জন্য কোমল পানীয়ের পরিবর্তে পুদিনা পাতাসহ বাটারমিল্ক পান করুন। বাটারমিল্ক কেবলমাত্র হজম প্রক্রিয়াই উন্নত করে না, এটি কম ভোজনেও সহায়তা করে। আপনি কোনটা বেছে নেবেন? চিনি সংযোজিত পানীয় নাকি প্রোটিন সমৃদ্ধ তরল? আপনার জন্য পরামর্শ হলো দ্বিতীয় অপশন।

* ফল খেয়ে মিষ্টান্ন খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা দমন করুন
ঈদের দিন মিষ্টি খাবার খেতে কে না ভালোবাসে? এ উৎসবে প্রত্যেক ঘরে অবধারিতভাবে মিষ্টান্ন তৈরি হয়। হ্যাঁ আমরা সবাই মিষ্টান্ন খেতে ভালোবাসি এবং একমাত্র ঈদেই প্রচুর পরিমাণে ঘি, চিনি, দুধ ও শুষ্ক ফল দিয়ে মিষ্টি খাবার প্রস্তুত করি। কিন্তু স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না চাইলে মিষ্টান্ন ভোজন সীমিত করতে হবে। মিষ্টান্ন খাওয়ার পূর্বে একটি ফল বা ২/৩টি খেজুর খেলে মিষ্টি খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কমে।

* অতিরিক্ত মাংস খাবেন না
সাধারণত লোকজন ঈদ উৎসবে নন-ভেজিটারিয়ান খাবার খেয়ে থাকেন, যেমন মিষ্টান্ন ও মাংস। অতিরিক্ত মিষ্টান্ন ভোজন যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, তেমনি অতিরিক্ত মাংসও আপনাকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলতে পারে। কারণ মাংস সহজে হজম হয় না এবং এতে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে। চর্বিহীন মাংস খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বেশি পরিমাণে খাবেন না। এছাড়া যে কোনো খাবারে অত্যাধিক লবণের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। কারণ গবেষণায় পাওয়া গেছে যে অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য ভালো নয়।

* টেবিল থেকে খাবার সরিয়ে ফেলুন
অল্প পরিমাণে খাবার খেয়ে অথবা মেহমানদের খাবার খাওয়া শেষ হলে টেবিল থেকে খাবার সরিয়ে ফেলুন। কারণ টেবিলে খাবার থাকলে তার দিকে চোখ যাবে এবং আপনার মনে আরো খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জন্মাবে। কিন্তু খাবার চোখের আড়ালে থাকলে খাওয়ার প্রবণতা কমে। কথায় আছে, চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, যত বেশি মিষ্টি খাবার খাওয়া হবে, শরীরে তত বেশি চিনি যাবে এবং অতিরিক্ত চিনি স্বাস্থ্যের নানারকম ক্ষতি করে।

এই বিভাগের আরো খবর