বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৪৮১

ঈদ সালামি নিতে গিয়ে আটক ভুয়া সাংবাদিকের দল

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২৪  

ঈদ উপলক্ষে গত ১১ জুন দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সাংবাদিক পরিচয়ে একদল প্রতারক সালামির দাবি করলে তাদের আটক করেন সমিতির লোকজন। পরে এমন কাজ আর করবে না এমন স্বীকারোক্তি দিলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এবং এদের ছবি তুলে রেখে সুপ্রিম কোর্ট চত্ত্বরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। 

গত ১১ জুনের ঘটনার দিন বর্ষা, শারমীন, মিজান, লিয়ন, জাহাঙ্গীর ও ভোগলা নামে  ৫-৬ জনের একটি দল ইদের সালামি চাইতে সুপ্রিম কোর্টর  বারের ট্রেজারারের কাছে জান। এসময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে, তাঁরা নিজেদেরকে প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতা পরিচয় দেন। প্রেসক্লাব-সুপ্রিম কোর্টের রিপোর্টও প্রচার করতে পারবেন। পরে তাদের চলে যেতে বললে এই চক্র ঈদ সালামি ছাড়া সুপ্রিম কোর্টর  বারের ট্রেজারার এর রুম থেকে যেতে অস্বীকার করেন। তখন বারের ট্রেজারার তাদের বিদায় করতে ৫০০ টাকাও দেন। এরপরও তারা বেশি টাকার জন্য বসে থাকলে বারের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করতে বলেন ট্রেজারার। 

এসময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আচরণ সাংবাদিক সুলভ না হওয়ায় আটকের চেষ্টা করেন বারের কর্মচারীরা। 

বিষয়টি টের পেয়ে এই চাঁদাবাজ চক্র, বর্ষা, শারমীন, মিজান, লিয়ন, জাহাঙ্গীর, ভোগলা পালানোর চেষ্টা করেন । তবে ব্যর্থ হন বর্ষা,শারমীন, এরপর তাদেরকে দিয়ে বাকিদের ধরার চেষ্টা করলে বারের কর্মচারীদের কথায় দুজন সাড়া দেন। 

পরে পুলিশ ডেকে এই তিনজনকে থানায় দেয়ার চেষ্টা করলে তাঁহারা এই ধরণের কর্মকান্ড আর করবে না বলে ক্ষমা চায়। এক পর্যায়ে এমন কাজ আর করবে না স্বীকারোক্তি নিয়ে তাদের  করে ছেড়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট বার। সেইসঙ্গে এদের ছবি তুলে রেখে সুপ্রিম কোর্ট চত্ত্বরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায় এদের মধ্যে অনেকেই এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বেশ কয়েক জায়গা থেকে অপদস্ত ও মার খেয়েছেন। ভুয়া সাংবাদিকদের এই চক্র মতিঝিল, পল্টন, কাকরাইল, সেগুনবাগিচার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে গিয়ে প্রেসক্লাবের নেতা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে। এমনকি প্রেসক্লাবে আয়োজকদের নাস্তানাবুদ করে এই চক্র। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য অস্বস্তিতে পড়েন পেশাদার সাংবাদিকরা।

 চাঁদাবাজী ছাড়াও এরা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে মোবাইল,ব্যাগ চুরির সাথেও জড়িত। এই চক্রের অনেকেই চাঁদাবাজি ও চুরির দায়ে  কয়েকদিন জেল খেটে জরিমানা দিয়ে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজ জড়িত হয়েছেন।

এই চক্রের সক্রিয় সদস্য বর্ষা দুই মাস আগেও পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। 

এই চক্রে শাহীনুর নামে একজন আছে সে প্রেসক্লাবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবার ও পানি বাহিরে বিক্রি করে এরা আবার বড় সাংবাদিক। 

এদের কারনে প্রেসক্লাবে প্রকৃত সাংবাদিকরা কাভারেজ বা বিট নিয়ে আসতে চায় না। 
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যদের মদদে এরা জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতাপের ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা যায় টাকার বিনিময়ে অনেক ভুইফোড় মিডিয়া হাউজ এদের সাংবাদিকতার কার্ড ধরিয়ে দেয়। 


পেশাদার সাংবাদিকদের অভিযোগ এই সংঘবদ্ধ দলে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার পরেও প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ কিছু না বলায় দিন দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।  পেশাদার সাংবাদিকদের দাবি এদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এই বিভাগের আরো খবর