মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১   ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৮৬৯

আর্ত-মানবতার সেবাই অন্যতম সংগঠন কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮  

একজন মানুষ বদলে দিতে পারে অন্য আর একজেনর জীবন। সেই বদলে দেয়া জীবনটাই আবার আমাদেরই কারো না কারো উপকারে আসতে পারে। আর্ত-মানবতার সেবাই নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেই রয়েছে জীবনের স্বার্থকতা। জীবনের উদেশ্যে শুধু নিজেকে সুখী করা নয় বরং উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত অন্যেকে সুখী করা। কথায় আছে পৃথিবীতে দান করে কিংবা মানবসেবা করে কেউ কখনো গরীব হয়নি, বরং গরীব মানসিকতার মানুষরাই কখনো কারো জন্য কিছু করতে পারেনি। পৃথিবীতে সেই মানুষগুলোই সবচেয়ে সুখের কাছাকাছি যেতে পেরেছে, যারা নিজেদেরকে আর্তমানবতার সেবায় বিলিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। নিজের জন্য নয় সমাজ ও মানুষের সেবা করার মাঝেই সবচেয়ে বড় আনন্দ। বাংলাদেশে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলো মানবতার সেবাই নিয়োজিত।

সমাজের অবহেলিত, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে এগিয়ে নিতে প্রাতিষ্ঠানিক সমাজকর্মের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে এ খাতে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী আত্ননিয়োগ করে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। সংস্থাগুলো বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। তারা শিশু কল্যাণ, যুব কল্যাণ, শারীরিক ও মানসিক অসমর্থ্য ব্যক্তিদের কল্যাণ, বয়স্ক শিক্ষা, পূর্ণবাসন, দুস্থদের কল্যাণ, দরিদ্র রোগীদের সেবা, রক্তদানসহ নানাবিধ মানবকল্যানে নিয়োজিত। এরি ধারাই রক্তদানে কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাবের  ভূমিকা অসামান্য। মূমুর্ষ রোগীদের জরুরী রক্তের চাহিদা পূরণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। রক্তদান হচ্ছে সবচেয়ে বড় একটি মানবসেবা। এটা একটা এবাদত। একজন মুর্মূর্ষ রোগীকে রক্তদান করে প্রাণে বাঁচানোর ঋণ শোধ করা যায় না।

একবিংশ শতাব্দিতে বিজ্ঞানের আর্শীবাদে জীবন ও জগতের উন্নতি হওয়া সত্বেও রক্তের কোন বিকল্প আবিষ্কার হয়নি। রক্তের বিকল্প শুধু রক্ত যা টাকার পরিমাপে মূল্যায়ণ অসম্ভব। একজন মূমুর্ষ রোগীর জন্য যখন জরুরী রক্তের প্রয়োজন হয় তখন বোঝা যায় রক্তের মূল্য কতখানি। প্রতিনিয়ত রক্তের অভাবে ঝরে যায় হাজারো প্রাণ। কিন্তু সামাজিকভাবে বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের সংখ্যা নিতান্তই অপ্রতুল। এর কারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা রক্তদান সম্পর্কে সচেতন নই, রক্তদানের কথা শুনলে আমরা ভয় পাই। কিন্তু আমরা যদি রক্তদান সম্পর্কে জানতে পারি, নিজেকে সচেতন করতে পারি ও মানবসেবায় নিজেকে উজ্জিবিত করতে পারি তাহলে রক্তদান সম্পর্কে ভয়টাকে জয় করতে পারি। কারন ১৮-৫০ বছরের সকল নারী পুরুষ শারীরিকভাবে সুস্থ্য থাকলে ৯০ দিন পর পর এক ব্যাগ রক্ত দান করতে পারে। রক্তদান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও রক্তদানকে একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালের ১২মার্চ কিছু উদীয়মান মানবসেবী তরুনের অক্লান্ত পরিশ্রমে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী সংগঠন কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব।

বর্তমানে সংগঠনটির সাফল্য অনেক। বাংলাদেশে শতভাগ রক্তের চাহিদা পূরণের স্বপ্ন নিয়ে বহু চড়াই উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। এ লক্ষ্যে বর্তমানে কক্সবাজার জেলা শহর, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সহ বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি শাখার মাধ্যেমে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় আয়োজনের মাধ্যেমে জানিয়ে দিচ্ছে সকল ধরনের মানুষকে তার নিজ নিজ রক্তের গ্রুপ। এছাড়াও রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করে বর্তমানে সংগঠনটি এ পর্যন্ত ২০০০ ব্যাগের অধিক  রক্তদানের মাধ্যেমে মানবসেবায় অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।

এছাড়া কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব রক্তদানের মত মহান দানের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নেও অংশগ্রহন করে আসছে।

আগামী ১২মার্চ সংগঠনটির ২য় বর্ষে পদার্পন হবে। এ উপলক্ষে রয়েছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা সভা, সম্মাননা পদক প্রদান ও দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। উক্ত আয়োজনের মধ্যে সমাজের অনেক তরুন উদ্ধুদ্ধ হবে সামাজিক কাজে  নিয়োজিত করতে। নিজেদের কাজের দ্বারা সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। সামাজিক সংগঠন হিসেবে ”কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব” এক সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সকলের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও সকলের মাঝে সম্প্রীতি সেতুবন্ধন তৈরিতে সামাজিক সংগঠন গুলোর উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত মানুষকে ভালোবাসা ও আর্ত-মানবতার সেবায় উজ্জীবিত হয়ে মানবতার কল্যানে ব্রতি হওয়া।