সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৮৭

অ্যাপের মাধ্যমে সহজ হচ্ছে শহুরে জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০১৮  

যাতায়াতের জন্য, যানজটের ধকল কমাতে, ব্যাংকিং সেবা সহজ করতে, হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বাসায় খাবার আনাতে, কেনাকাটা, ভাষা শেখাসহ নানা কাজে নগরবাসী অ্যাপসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। দিন যাচ্ছে গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে সেবামূলক বিভিন্ন অ্যাপস। ঘরে বসেই রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার গাড়ি ও মোটরবাইক বুকিং রাইড শেয়ারিং- করছে অনেক মানুষ। পাশাপাশি দূরপাল্লার বাস, ফেরির টিকিট থেকে শুরু করে সিনেমার টিকিটও বুকিং দেয়া যাচ্ছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপে। কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই  অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় যাবতীয় সেবা প্রদান করাই মূল লক্ষ্য। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাতায়াত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যানজট, নিরাপত্তা, বইপড়া, বিনোদন, ফ্যাশনসহ প্রয়োজনীয় হাজারো অ্যাপ আছে। এর মধ্যে শুধু শহরের মানুষকে সেবা দিতে বেশ কিছু অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

হিল্লোল ইসলাম কল্যাণপুর থেকে রামপুরার কর্মস্থলে যাবেন। তৈরি হতে হতে ঘরে বসেই রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করে মোটরসাইকেল ডাকেন। তিন মিনিটের মাথায় মোটরসাইকেল হাজির। যানজট এড়াতে গুগল ম্যাপের সাহায্য নেন এই চাকরিজীবী। কিন্তু রাইড শেষে ভাংতি টাকা না থাকায় বিল মেটাতে ঝামেলায় পড়েন তিনি। এদিকে বিকাশেও টাকা নেই।

ভাড়া কীভাবে মেটাবেন, চিন্তা করতে গিয়ে নিজের ব্যাংকের অ্যাপের কথা মনে পড়ে। মুহূর্তে অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংক হিসাব থেকে বিকাশে টাকা স্থানান্তর করেন। পরে বিকাশের মাধ্যমে ভাড়া মিটিয়ে দেন।

শুধু হিল্লোল ইসলাম নন, দৈনন্দিন জীবনযাপন সহজ করতে রাজধানীর বাসিন্দারা নানা ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করছেন। অ্যাপস ব্যবহারকারীরা বলছেন, অ্যাপসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অনেক ধরনের সেবা মিলছে। যাতে সময়, অর্থ ও শ্রমের সাশ্রয় হচ্ছে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় রাজধানীবাসীর জীবনযাত্রার ধরনে পরিবর্তন এসেছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ডিজিটালাইজেশনের শুরু মোবাইল থেকে। বাংলাদেশেও সে হাওয়া লেগেছে। সরকারের পরিকল্পনা আছে সব ধরনের সেবা অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়ার।’

নানা ধরনের অ্যাপ ব্যবহারকারী হিল্লোল বলেন, আগে অফিসে যেতে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো। ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠতে হতো কিংবা দর–কষাকষি করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিতে হতো। এখন অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই যাতায়াতের বাহন ঠিক করা যায়। এতে খরচও কমেছে।

অ্যাপ ব্যবহার নিয়ে নগরের বিভিন্ন বয়সের অন্তত ৩০ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, অ্যাপ নগরজীবনকে সহজ করেছে। কীভাবে সহজ হয়েছে, এ সম্পর্কে বলছিলেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মোহসেনা চৌধুরী। তিনি বলেন, মেয়ে বায়না ধরেছিল জন্মদিনে বন্ধুদের বাসায় দাওয়াত দিতে হবে। অথচ অফিস থেকে ছুটি পাননি তিনি। মেয়েকে কী বলবেন ভেবে কিছুটা মন খারাপ করেই কাজ করছিলেন তিনি। সমস্যার কথা জানতে পেরে একজন সহকর্মী উপায় বাতলে দেন। মোহসেনা সঙ্গে সঙ্গে খাবারের হোম ডেলিভারি অ্যাপ নামিয়ে মেয়ের ও তার বন্ধুদের পছন্দের খাবারের অর্ডার করেন।

অ্যাপের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দেশের সরকারি–বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানই অ্যাপের মাধ্যমে সেবা দিতে শুরু করেছে বলে জানান অ্যাপ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এথিক্স অ্যাডভান্স টেকনোলজিস লিমিটেডের (ইএটিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মবিন খান।

এই বিভাগের আরো খবর