অস্তিত্ব সংকটে পাথারিয়া হিল ফরেস্ট
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৪

মৌলভীবাজারের জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে অবস্থিত পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট। সিলেট বিভাগের মধ্যে এই বনটি এখনো বেশ সমৃদ্ধ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সীমারেখার মধ্যে চারটি বন বিট নিয়ে পাথারিয়া বনটি অবস্থান।
এই বনের পূর্বদিকে ভারতের করিমগঞ্জ, উত্তরে শাহবাজপুর আর দক্ষিণ ও পশ্চিমে চা-বাগান। পাহাড়ের মাঝে মাঝে কিছু মানুষের বসতি। পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট নামটি অনেকের কাছে পরিচিত নয়। কিন্তু মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের কথা কমবেশি দেশের ছোট বড় সবাই জানে। এই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত পাথারিয়া পাহাড়ে অবস্থিত। পরিবেশগত ভাবে মিশ্র চিরসবুজ বনাঞ্চলের এ অংশটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র হটস্পটের একটি অংশ।
এই বনকে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২০ সালে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয়। যেখানে ১৯৬৭ সালে পাথারিয়া পাহাড়ের আয়তন ছিল ১ হাজার ১৫২ বর্গকিলোমিটার। সেখানে মানুষের বসতি বেড়ে এই বনের আয়তন দিন দিন কমছে। বর্তমানে সম্মিলিত আয়তন মাত্র ১৩৫ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ৮৮ বর্গ কিলোমিটারের কাছাকাছি। বাকি অংশ পড়েছে ভারতে। এক সময় পাথারিয়ায় বুনো মোষ, বাঘ, পারবতি হরিণ ও গন্ডারসহ বড় আকারের অনেক বন্যপ্রাণী ছিল। গত দুই বছর আগে ক্যামেরা ট্রাপিং করে এই বনে এশীয় হাতি, বিপন্ন ফেরেট ব্যাজার, বাঁশ ভাল্লুক, সজারু, হলদে গলা মারটেন ও আসামি বানরসহ অনেক বিপন্ন প্রাণী দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ ২০০৭ সালে বনের সুরমা বাঁশমহাল নামক এলাকায় চিতা বাঘের আক্রমণে একটি গরু মারা গেছে। তখন গরুর মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে মৃত গরুটির শরীরে বিষটোপ প্রয়োগ করেন। সেই শিকারি চিতাবাঘটি মৃত গরুটির মাংস খেতে এসে বিষটোপ খেয়ে মারা যায়। বিষয়টি হঠাৎ মধু শিকারির দৃষ্টিগোচর হয়। তারপর লোকমুখে জানাজানি হলে বাঘটি দেখতে এলাকার উৎসুক মানুষ ভিড় জমায়। মধু শিকারি ও উৎসুক জনতা একপর্যায়ে বাঘটিকে স্থানীয় দিলখুশ বাজারে নিয়ে আসেন। পরে বন বিভাগ খবর পেয়ে বাঘটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে স্থানীয়দের চোখে বাঘ দেখা কিংবা বাঘে গরু ধরার এমন দৃশ্য কখনো চোখে পড়েনি।
নিবিড় পর্যবেক্ষণে সম্প্রতি এই বনে প্রায় ৩৮ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মাঝারি মাংসাশী প্রাণীদের মধ্যে সোনালি বিড়াল ও মেছো বিড়ালের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। এগুলো দেখে কিছুটা আনন্দ হলেও চিতাবাঘ অথবা মেঘলা চিতার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় মধু শিকারিরা জানান, বিগত ২০১৭-২০১৮ সনের দিকে ভারত থেকে এক দল আদিবাসী শিকারি বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করে পাখি, বানর, গুইসাপ, চশমাপরা ও মুখপোড়া হনুমানসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী শিকার করেছে। এ বিষয়ে তখন বন বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করে।
সিলেট বিভাগের একমাত্র বন যেখানে মাত্র চারটি মেয়ে বন্যহাতি জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে আজও এই বনে টিকে আছে। কখনো বনে তাদের তাঁজা পদচিহ্ন দেখে আমরা আবেগআপ্লুত হয়ে যাই। বুনো হাতিগুলো আজ মানুষের পৃথিবীতে দুই দেশের কাঁটাতারে বাধার সম্মুখীন। এই দলের একটি হাতি বৃদ্ধ হয়ে গেছে। খাবার হজম হয় না যেভাবে খায় সেভাবে পায়খানা করে। কিছুদিন আগে জামকান্দি এলাকার একটি সবজি বাগানে এই দৃশ্যটি দেখা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, সব সময় এমন দেখা যায়। পুরুষ হাতি না পেলে হাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে! হাতিগুলোর বিলুপ্ত ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন একটি পুরুষ হাতি। যে কারণে বন্যপ্রাণী এখন হুমকির মুখে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ করে দেখা গেছে, বন্যপ্রাণীরা বন ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে মানুষের সঙ্গে সংঘাতের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে প্রাণীরা মরছে নিয়মিত। তাদের চিরচেনা প্রিয় আবাস্থল ছেড়ে লোকালয়ে আসার কারণ হিসেবে জানা গেছে। বনের মূল ভূখণ্ডকে কেন্দ্র করে বন বিভাগের কৃত্রিম বনায়ন করেছে। এসব কারণে তাদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে স্থানান্তর হওয়ায় বন্যপ্রাণীরা তাদের অস্তিত্ব হারাচ্ছে।
বনের যে স্থানটি ছিল প্রাকৃতিকভাবে বেশ সমৃদ্ধ। ২০২০ সালে যে স্থানে একটি জরিপে দেখা গিয়েছিল চারটি উল্লুকের পরিবার। কিন্তু বনায়নের কারণে বিভিন্ন ফলজ গাছ কাটা পড়েছে এবং লতাগুল্ম গুড়া কেটে ফেলার কারণে তাদের খাবারের সংকট বিড়াট আকারে দেখা দেয়। এ কারণে বর্তমানে বন্যপ্রানী হুমকির সম্মুখিন। সুরমা বাঁশমহালের বনায়নকৃত এই এলাকায় কোনো বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি তেমন দেখা মিলে না। কখনো ফিরে আসবে কি তারও কোন নিশ্চিয়তা নেই। ফলশূন্য আকাঁশমনি গাছ দিয়ে বনায়ন করায় বন্যপ্রাণী জীবন যাপন করা খুব কঠিন হয়ে দাঁয়িয়েছে। বন্যপ্রাণীকে ঠিকিয়ে রাখতে হলে তাদের আবাস্থল সংরক্ষণ করা জরুরি।
এই বনের প্রাকৃতিক বনাঞ্চল যতটুকু এখনো টিকে আছে, সঠিক ভাবে তা সংরক্ষণের আওতায় আসলে এসব প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। মাধবছড়া ও লাঠিটিলা বিটের সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের সঙ্গে সমনবাগের কিছু এলাকাজুড়ে এখনই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। এ ছাড়া বন্যপ্রাণী শিকারি ও গাছ চোরাকারবারিদের দমন করা এখন সময়ের দাবি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী গবেষক ড. এম এ আজিজ বলেন, পাথারিয়া পাহাড়ে মানুষের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। একে ছেড়ে দিতে হবে সম্পূর্ণ প্রকৃতির ওপর। এতে যে পাথারিয়া ধীরে ধীরে বিরল বন্যপ্রাণীর শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে উঠবে, এটি নিশ্চিত করে বলা যায়। অতীতে কতটুকু কী হয়েছে, সেদিকে আমাদের ফিরে গিয়ে আর লাভ নেই। আমাদের এখন নতুন করে নতুন চিন্তা ভাবনা করতে হবে।
পাথারিয়া পাহাড় রক্ষা করতে না পারলে অতীতে নানা জাতের বুনো প্রাণীদের মেলা ওই বনে। পাহাড়ের ঘন জঙ্গল থেকে হাওরের সমতল এলাকায় নেমে আসত বুনো মোষ, জলার হরিণ আর গন্ডার। ফলে শিকারিরা এসব প্রাণী খুব সহজেই শিকার করতে পারত। অতীতের সেই পাথারিয়া বনের বিরল প্রাণ-প্রকৃতির ইতিহাস আমরা কতটুকুই–বা জানি। আজও এ বনে প্রাণ-প্রকৃতির যেটুকু টিকে আছে, তাও আমাদের কাছে প্রায় অজানা। এ আমাদের বড় দৈন্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিচারালয়ে দাঁড়াতে হবে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায়।
- ১০ শতাংশ কমছে টেলিটকের ডাটা প্যাকেজের দাম
- ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে উল্টে গেলো বালুবাহী ট্রাক ৫ কিলোমিটার যানজট
- এবার সৌদি ও বাংলাদেশে একই দিনে ঈদ
- বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাতের সময়সূচি
- চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- যমুনা সেতু দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকার টোল আদায়
- নির্ধারিত সময়ে ছাড়ছে সব ট্রেন, আজ ঢাকা ছাড়বে ৬৯টি
- যশোরে তারেক রহমানের পক্ষে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
- ঈদে লম্বা ছুটি, সুযোগ টানা ১১ দিনের
- ধর্ম উপদেষ্টা
সংখ্যালঘু নির্যাতন যেভাবে বলছেন সেই মাত্রায় নেই - গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত বেড়ে ৩২৬
- শেখ হাসিনা ও রেহানা পরিবারের ৩৯৪ কোটি টাকা ফ্রিজ
- লাকসামে এক নেতার বাড়িতে নিয়ে তরুণী কে ধর্ষণ
- অঙ্গীকার-এর উদ্যোগে ঢাবিতে নবীনবরণ ও ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত
- ন্যানসি কন্যা রোদেলার কণ্ঠে আসছে ঈদের গান
- জনগণ পছন্দ করে না এমন কোন কাজ করা যাবে না
- নোয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে হেনস্তা প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ
- লাকসামে ছাত্রদলের পদ-বঞ্চিতদের বিক্ষোভ মিছিল
- চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সভা অনুষ্ঠিত
- প্রথম একসঙ্গে ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে হাবিব-প্রীতম
- দুই দিনের সরকারি সফরে মরিশাস পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদী
- ধর্ষণ থেকে বাঁচতে নারীদের ‘কারাতে’ শেখার আহ্বান নায়ক রুবেলের
- ধর্ষণের মামলা ৯০ দিনে শেষ করতে আইন হচ্ছে : উপদেষ্টা
- ফরিদপুরে সাইকেলে ঘোরানোর কথা বলে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ কিশোর আটক
- ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ
- মাগুরায় বোনের বাড়িতে এসে ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার আটক ২
- আল কুরআন বিরোধী সংবিধানের আইন-বিধান প্রতিষ্ঠা
- সমাজ ও রাষ্ট্রে আল কুরআনের আইন-বিধান প্রতিষ্ঠান করতে হবে: আমির
- ঈদযাত্রার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ
- যশোরে তারেক রহমানের পক্ষে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
- চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- নির্ধারিত সময়ে ছাড়ছে সব ট্রেন, আজ ঢাকা ছাড়বে ৬৯টি
- যমুনা সেতু দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকার টোল আদায়
- বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাতের সময়সূচি
- এবার সৌদি ও বাংলাদেশে একই দিনে ঈদ
- ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে উল্টে গেলো বালুবাহী ট্রাক ৫ কিলোমিটার যানজট
- ১০ শতাংশ কমছে টেলিটকের ডাটা প্যাকেজের দাম
- গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলে পালিয়ে বাড়ি গেলেন সুমি
- সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবসম্মত হওয়া প্রয়োজন: ফখরুল
- শিশির ভেজা পায়ে এলো হেমন্ত
- সামাজিক ব্যক্তিত্বে এগিয়ে আমেরিকা প্রবাসি আলহাজ্ব মনির আহমেদ
- ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় লোকোমোটিভ মাস্টার দায়ী: রেলমন্ত্রী
- দেশ টিভির ডিএমডি আরিফ হাসানের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- মোংলা ও পায়রায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রামে ৯
- ট্যাটু আঁকার নামে মেয়েদের সঙ্গে যা করতে বাদশাহ (ভিডিও)
- উল্লাপাড়ায় ট্রেন লাইনচ্যুত, ইঞ্জিন ও বগিতে আগুন (ভিডিও)
- মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীর গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
- শিল্পের কারিগর বাবুই পাখি
- বাংলাদেশে পিঁয়াজের কেজি ১৪০ টাকা, ভারতে ৬ রুপি বা ৮ টাকা
- শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার সততা, সাহস ও আদর্শের মূর্ত প্রতীক
- কোরআন অবমাননা : সেফুদার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
- শিপ্রা`র রিট খারিজের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়!