মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১   ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খান? ক্যান্সার হতে পারে!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত : ১১:৩৭ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার

আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পান। অতিথি আপ্যায়নে পান না থাকলে পুরো ব্যাপারটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়! আবার অনেকে ধূমপানের নেশা তাড়াতে পান খাওয়ার অভ্যাস করেন। এমনও অনেকে আছেন অন্য খাবার কম থাকলেও চলবে কিন্তু পান না থাকলে চলবে না। এরা সঙ্গেই রাখেন পানের পোটলা। তাদের সাবধান হওয়া উচিত। কেননা পানের আনুষাঙ্গিক থেকে ক্যান্সার ছড়াতে পারে! 

পান আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও পানের রয়েছে আরও অনেক গুণ। কিন্তু বিপদটা ওই জায়গায়, যখন পানের সঙ্গে চুন, সুপারি, জর্দা, খয়ের ইত্যাদি খাওয়া হয় তখন। এভাবে পান খাওয়ার অভ্যাস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় বলে দাবি করেন ক্যান্সার গবেষক ও চিকিৎসকরা।

আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের আইএআরসি’র গবেষকদের মতে, যারা তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি, চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খান অন্যদের তুলনায় তাদের ওরাল ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি! এই সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মশলা ও জর্দা দিয়ে পান খাওয়ার চল অনেক বেশি। যার ফলে বিশ্বের মোট ওরাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর ৫৮ শতাংশই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, সুপারি, চুন, জর্দা দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় দশ গুণ (৯.৯) গুণ এবং জর্দা ছাড়া শুধু চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় আট গুণ (৮.৪ গুণ) বেড়ে যায়। এ ছাড়া ‘সালমোনেলা’ নামে ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণু পান পাতায় বাসা বাঁধে। এই জীবাণু পেটের নানা রোগের জন্য দায়ী।

গবেষণায় চুনে পাওয়া গেছে প্যারা অ্যালোন ফেনল। এই প্যারা অ্যালোন ফেনল মুখে ঘা বা আলসার সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘা ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া কাঁচা সুপারিতে পাওয়া গেছে উচ্চমাত্রার সাইকোঅ্যাকটিভ এলকালয়েড। যা শরীরে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এই সুপারি চিবুলে গরম লাগতে থাকে এবং শরীর ঘেমে যায়।

সুপারি খেলে বেড়ে যেতে পারে হাঁপানির সমস্যা এবং হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পান পাতা তেমন ক্ষতিকর না হলেও, পান খাওয়ার আনুষাঙ্গিক উপাদানগুলো মুখে ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।