বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তাহলে কি ভাঙছে মেননের ওয়াকার্স পার্টি ?

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত : ১১:৪৮ এএম, ২০ অক্টোবর ২০১৯ রোববার

প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরে এসে আবারও অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই শরিক দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। এই দুই শীর্ষ নেতাসহ পার্টির কেন্দ্রের গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে লিখিতভাবে ভিন্নমতসহ অভিযোগ তুলে ধরেছেন দলটির পলিটব্যুরোর দুই সদস্য নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদ। একইসঙ্গে বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা পোষণ করেছেন দলের সর্বোচ্চ এ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের ১১ সদস্যের মধ্যে আরও দুই সদস্য, যাদের মধ্যে পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস চলতি সপ্তাহেই দল থেকে নিজের সদস্য পদ প্রত্যাহার করে নেবেন। সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দলে উত্থাপিত ‘অভিযোগ ও ভিন্নমত’কে স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে তিনি বলেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টিতে এসব অভিমত আসে। একটি দলের মধ্যে অসংখ্য অভিমত থাকে। এবার আমাদের পলিটব্যুরোর দু’জন সদস্য লিখিতভাবে তাদের মত তুলে ধরেছেন। এই প্রস্তাব আমরা পুরো পার্টিতে প্রচার করেছি।’

বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে মেনন বলেন, ‘আমাদের যে কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক প্রস্তাব ও সাংগঠনিক দলিল গেছে সবার কাছে, সেখানেও এই ভিন্নমত যুক্ত করা হয়েছে। এর ওপর প্রত্যেক জেলায় আলোচনা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে তারা অভিমত দিচ্ছেন। এই অভিমতগুলো কংগ্রেসের আগে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কী অভিমত, কিসের ভিত্তিতে এসেছে, সেটা আমরা কংগ্রেসে উপস্থাপন করবো। এখন যারা অভিমত দিয়েছেন, তারা কংগ্রেসে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। এরপর ঐকমত্য হলে ভালো, না হলে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিমতের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত হয়, তা-ই হবে।’

পলিটব্যুরোর সদস্য যশোর জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ইকবাল কবির জাহিদ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলছেন, ‘কর্মীদের অভিযোগ, সারাদেশে ভিন্নমত সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। বিভিন্ন জেলায় নতুন সদস্য তৈরি করা হচ্ছে। গঠনতন্ত্রের নিয়মকানুন ভঙ্গ করে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মতো গণ সদস্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার অপকৌশল নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী, ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ কাজ সুকৌশলে সম্পাদন করা হয়েছে।’

ভিন্নমত ও অভিযোগ উত্থাপনের সঙ্গে যুক্ত ওয়ার্কার্স পার্টির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের সদস্যরা বলছেন, দলের মতাদর্শ, রণনীতি, লেনিনীয় নীতি, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও অভিমতকে উপেক্ষা করছেন ফোরামের শীর্ষ দুই নেতাসহ অধিকাংশ সদস্য। আগামী ২ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ১০তম কংগ্রেস এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে পড়বে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সংবাদ সম্মেলনে নেতারা ভিন্নমতের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের আশঙ্কা, ইতোমধ্যে দশম কংগ্রেসকে সামনে রেখে সারাদেশে কমিটি হচ্ছে। এসব কমিটি গঠনে কেন্দ্রের প্রভাবে ভিন্নমতকে এড়িয়ে যাওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বগুড়া, মাদারীপুর, পিরোজপুরে ইতোমধ্যে স্থানীয় নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বগুড়া জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালেহা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের বগুড়ায় পুরনো সদস্য ছিল ১১৩ জন। এবার জেলার সাধারণ সম্পাদক ঘরে বসেই আরও ৪০ জনের ফরম পূরণ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন এবং এটা গৃহীতও হয়েছে। এভাবে রাজশাহীতে যেখানে ২০০ সদস্য, সেখানে নতুন করে ১ হাজার ১০০ সদস্য যুক্ত করা হয়েছে। বগুড়ায় যাদের সদস্য করা হয়েছে, তাদের কখনও দলীয় কর্মসূচিতে দেখিনি।’

পার্টিতে কেন এই অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে, বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ওয়ার্কার্স পার্টির নারী মুক্তি সংসদের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করে এসেছি পার্টি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলছে না। আদর্শ থেকে সরে যাচ্ছিল। বিশেষ করে জোটের নৌকা গ্রহণ করা, প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন না তোলা, সরকারে অংশগ্রহণ করার বিষয়গুলো মার্কসবাদী আদর্শের ভিত্তিতে ঘটেনি।’

সালেহা সুলতানা আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে পার্টি ভেঙেই যাবে।’ পলিটব্যুরোর একাধিক সদস্য মনে করছেন, কংগ্রেসকে সামনে রেখে রাশেদ খান মেননপন্থীরা ভিন্নমত পোষণকারীদের কোণঠাসা করলে দল নিশ্চিত ভাঙনের মুখে পড়বে। এ বিষয়ে পলিটব্যুরোর সদস্য ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘আদর্শিক, রণনীতির শত্রু যারা, তাদের সঙ্গে ঐক্য করা, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করা ছাড়াও সরকারে অংশগ্রহণ নিয়ে দলের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নৌকা প্রতীক ব্যবহার করতে চাই না, সরকারে অংশগ্রহণ করতে চাই না।’

দল ভাঙা বা না ভাঙার বিষয়ে ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘সংশয় তৈরি হচ্ছে কংগ্রেস বৈধ প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে হবে কিনা। ইতোমধ্যে পার্টিতে এ প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেস প্রহসনে পরিণত হবে। এই টানাপড়েন এখন দলে চলছে। ফলে, কংগ্রেস কীভাবে আয়োজন হবে, এর ওপর নির্ভর করছে দলের ভবিষ্যৎ।’

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইডেট কমিউনিস্ট লীগ ও সাম্যবাদী দল (আলী আব্বাস)—এই তিনটি দল নিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। ১৯৯৫ সালে পলিটব্যুরোর সদস্য টিপু বিশ্বাস বেরিয়ে নতুন দল করেন গণফ্রন্ট। ২০০৪ সালের ১৪ জুন বেরিয়ে পলিটব্যুরোর আরেক সদস্য সাইফুল হক, বর্তমানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী কংগ্রেসকে সামনে রেখে পার্টি তৃতীয় দফায় ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পার্টির একাধিক নেতা।

ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের একাধিক সদস্য জানান, ২০ বছর আগে থেকেই পার্টির অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতা নিয়ে নেতাকর্মীদের অবস্থান তৈরি হয়েছিল। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মন্ত্রিত্ব, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়ে নাম আসা, বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নাম আসা, সর্বশেষ ক্যাসিনো ব্যবসায় যুক্তদের সঙ্গে রাশেদ খান মেননের নাম আসার পর দলের ভেতরে বিরোধিতা প্রকাশ্যে আসে। একইসঙ্গে দলের ভেতরে একটি গ্রুপ এ বিষয়গুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মেননের স্ত্রী লুৎফুন্নেছা বিউটিকে মনোনয়ন নেওয়ায় পার্টির একটি অংশ তা মেনে নিতে পারেনি।

যদিও মেননের ঘনিষ্ঠ একজন পলিটব্যুরোর সদস্য মনে করেন, ইকবাল কবির জাহিদ ও বিমল বিশ্বাস গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হলে এসব বিষয়ে প্রশ্ন উঠতো কিনা—সেই প্রশ্নও তোলেন এই নেতা।  

মেননের পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষকের মতে, ২০১৪ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অংশ হওয়ায় সরকারের ডিজাইনের বাইরে যেতে কতটা সক্ষম হবে ওয়ার্কার্স পার্টি, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। 

দল ভাঙার বিষয়ে পুরো নেতিবাচক হলেও আবশ্যিকভাবে আগামী নির্বাচনগুলোয় নৌকা প্রতীক বাদ দিয়ে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন পলিটব্যুরোর সদস্য নুরুল হাসান। গত ১৭ অক্টোবর রাশেদ খান মেননের সঙ্গে দলের বর্তমান অবস্থান নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকও করেছেন তিনি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস শনিবার বিকালে নুরুল হাসান বলেন, ‘আমরা কংগ্রেসে থাকবো, আমাদের বক্তব্য তুলে ধরবো। আমি আর রাজবাড়ীর একজন আছেন, আমরা কথা বলবো। অনেকে বিভ্রান্ত করছে, দল ভাঙবে, তারা আইসোলোটেড। আমাদের কংগ্রেসের ১১ সদস্যের মধ্যে মেজরিটি তাদের দিকে, কিন্তু লোয়ার বডিতে আমাদের পক্ষে। প্রত্যেকটি জেলা সম্মেলনে আমাদের পক্ষে রায় যাচ্ছে।’

পার্টি ভাঙনের বিষয়ে নুরুল হাসান বলেন, ‘আমরা পার্টি ভাঙবো না। পার্টির ভেতরে থেকেই কথা বলবো। আমাদের মূল কথা, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবো না। এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগেও মেনন সাবকে বলেছি আপনার আগের জনপ্রিয়তা আর নেই। এখন জনপ্রিয়তা নিচের দিকে।’

সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেবেন বিমল বিশ্বাস পার্টির সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস মনে করেন, ‘মার্কসবাদী সংগঠন হিসেবে কোনও কিছুতেই ওয়ার্কার্স পার্টি কাজ করছে না। এই পার্টিকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিই মনে করেন না।’

বিমল বিশ্বাস বলেন, ‘যেহেতু এই পার্টি কমিউনিস্ট পার্টি নয়, সে কারণে আমি এই দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবো।’

আগামী ২২ অক্টোবর বিমল বিশ্বাস লিখিত বক্তব্য দল ও গণমাধ্যমে পাঠাবেন, এমন তথ্য জানিয়েছেন তার একজন ঘনিষ্ঠজন। 

নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদের ভিন্নমতের উল্লেখযোগ্য দিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিও পলিটব্যুরোর সদস্য নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদ প্রণীত ভিন্নমতের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো হচ্ছে, তারা মনে করেন, ‘পার্টি মূল আদর্শ থেকে সরে গেছে, সরকারের হেফাজতের তোষণের সহযোগী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখা যা কমিউনিস্ট পার্টি হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টির অতীতের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতার শামিল। এছাড়া, পার্টির সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ, স্বৈরাচার এরশাদের সঙ্গে জোট ও সরকারে অংশ নিয়ে নেতৃত্ব মহল বিশেষের স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ ওঠায় দল গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তারা।’

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভিন্নমত মনে করে ১৪ দলীয় জোট, সরকার ও নৌকা মার্কা বাদ দিয়ে পার্টিকে শ্রমিক কৃষক শ্রমজীবী মধ্যবিত্ত শোষিত জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে স্বাধীন ভূমিকা নিতে হবে।

প্রস্তাবে পার্টির দুই নেতা বিভিন্ন করণীয় উল্লেখ করেছেন। এরমধ্যে, পার্টিকে নিজস্ব স্বাধীন রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ, শ্রেণি, গণ আন্দোলন ও জনজীবনের দৈনন্দিন সমস্যার ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোলা, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদবিরোধী গণতন্ত্রের সংগ্রাম, শ্রেণিশক্তির সমাবেশ যা প্রধান গুরুত্ব দেওয়া, সাম্রাজ্যবাদ ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী আন্দোলনের বিস্তৃতি সাধন ও তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষার আন্দোলন পুনর্গঠিত করার কাজে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ, কমিউনিস্ট ও বাম ঐক্যে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।

মতাদর্শিক করণীয় হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে অনৈতিক সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। সাংগঠনিক করণীয় হিসেবে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সক্রিয়তার ভিত্তিতে পার্টি সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে হবে ইত্যাদি।