প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেহ ব্যবসা!
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৫:৪২ পিএম, ১৭ জুন ২০১৯ সোমবার
নড়াইল সদরের নাকশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরীরর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে রাতে স্কুলের কামরায় দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার স্কুল প্রাঙ্গণে ওই নৈশ প্রহরীসহ জড়িতদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার নাগ উচ্চ রক্তচাপে অসুস্থ হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিনই নানা এলাকা থেকে নারীদের এনে স্কুলের কক্ষে দেহ ব্যবসা চালাতো নৈশ প্রহরী লতিফ সিকদার। গত বুধবার রাতে এলাকাবাসী বিষয়টি হাতেনাতে ধরে স্কুলের গেট আটকে দেয়। পরে প্রভাবশালী কিছু লোকের উপস্থিতিতে ছাড়া পায় ওই নাইটগার্ড।
ঘটনার পরদিনই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুল ১৩ জুন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা দেখিয়ে ওই দপ্তরিকে সাময়িক বরখাস্ত দেখালেও সেই সভায় প্রধান শিক্ষক এবং একজন সহকারী শিক্ষক ছাড়া কারো উপস্থিতির সই নেই। ফলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে একপর্যায়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উচ্চরক্তচাপের কারণে অচেতন হয়ে পড়েন।
প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার নাগ অসুস্থ হবার আগে বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে খবর পেয়ে ভোরে স্কুলে ছুটে আসি। এসময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফ সিকদার, মফিজুর রহমান, সুলতান আহম্মেদ, শরিফুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। নৈশ প্রহরী আলতাফও উপস্থিত ছিলেন। সেসময়ই তাকে পুলিশে দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা করার চেষ্টা করি। না পেরে পরে সভাপতির জিম্মায় দিয়ে চলে আসি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী লতিফ সিকদার মোবাইল ফোনে নিজের দোষ অস্বীকার করে বলেন, আমি স্কুলে ঘুমিয়ে ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা এ ব্যাপারে সে কিছু জানে না বলে জানায়।
প্রতিবেশী বিপ্লব মোল্যা জানান, স্কুল হলো মানুষ গড়ার স্থান। এই স্থানে এই ধরনের অপকর্ম দিনের পর দিন চললেও ম্যানেজিং কমিটি বা প্রধান শিক্ষক কেউ দেখছেন না। এভাবে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।
স্থানীয় কয়েকজন যুবক জানান, প্রায় রাতেই এই স্কুলের দোতলায় দেহ ব্যবসা চালায় নৈশ প্রহরী লতিফ। একেকদিন একেক জন নারী নিয়ে আসে আর প্রভাবশালীরা লতিফকে টাকা দিয়ে যায়। এখানে যারা আসে তারা প্রভাবশালী বলে ভয়ে আমরা কথা বলি না।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আশরাফ সিকদারে মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
নড়াইল সদর থানার এসআই রজত কুমার জানান, এই স্কুলের দপ্তরি কাম নাইটগার্ডের অপকর্মের অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় কয়েকজন জড়িত আছেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।