বেশি ঘাম মানেই কি কঠোর ব্যায়াম?
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ০১:৪৬ পিএম, ১৬ জুন ২০১৯ রোববার

অনেক মানুষের জন্যেই ঘাম ঝরানো ব্যায়াম সুখকর বিষয়। এটা অনেকটা মনের শান্তি যে, খুব ভালোভাবে ব্যায়াম করা মানেই প্রচুর ঘাম ঝরা। গরমকালে বা বন্ধ কক্ষেও ব্যায়াম করতে চাওয়া এই একটি বিষয়ের জন্যেই। তবে ঘাম ঝরানো ব্যায়াম মানেই কি কার্যকর ব্যায়াম? এ নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ঘটনাক্রমে ব্যায়াম প্রশিক্ষকরা এভাবেই শেখান। আবার ব্যায়াম করতে করতে ঘামা স্বাভাবিক বিষয়। ঘাম বেশি মানেই কায়িকশ্রম বেশি। এটাই কঠোর ব্যায়ামের নমুনা। কিন্তু ঘটনা আসলেই কি তাই? বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘামের পরিমাণের ওপর ব্যায়ামের গুণগত মান কিংবা কার্যকারিতা নির্ভর করে না। ক্যালোরি খোয়ানোর নিশানাও দেখায় না ঘাম।
দেহের তাপমাত্রা বৃ্দ্ধি মানেই এক্রিন গ্রন্থি থেকে ঘাম নিঃসরিত হওয়া। আর এই ঘাম শুকানোর মাধ্যমে দেহ শীতল হয়ে আসে। বেশ পরিশ্রমেই নয়, মানসিক চাপ এবং ভয়ের কারণেও ঘাম ঝরতে পারে। এ ধরনের ঘাম আসে অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থি থেকে। এর অবস্থান বোগল এবং কুঁচকিতে।
ব্যায়ামের সময় ঘামা কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এর মধ্যে লিঙ্গগত পার্থক্য (পুরুষরা নারীদের চেয়ে বেশি ঘামেন), বয়স (কম বয়সীরা বয়স্কদের চেয়ে বেশি ঘামেন), জেনেটিক বৈশিষ্ট্য, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা গুরুত্বপূর্ণ। যিনি ব্যায়াম করছেন তার ওজনকেও বাদ দেয়া যায় না। স্থূলদের দেহ বেশি তাপ উৎপন্ন করে। কাজেই ঘামও বেশি হবে।
ফিটনেসের মাত্রাও ঘাম উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখে। অদ্ভুত হলেও সত্য যে ফিট মানুষগুলো অন্যদের চেয়ে বেশি ঘামেন। ব্যায়ামের সময় খুব দ্রুত ঘেমে যান তারা। যাদের ফিটনেস কম তারা ধীরে ধীরে ঘামেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের ফিটনেস বৃদ্ধির সাথে সাথে তার তাপ-নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি আরো বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। এতে দেহের তাপও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে এবং আরো বেশি শ্রম ঢালতে উপযোগী করে তোলে।
কাজেই প্রচুর ঘামের মাধ্যমে অনেক বেশি ক্যালোরি ঝরিয়েছেন বলে যদি মনে করেন তো ভুল করছেন। ঘাম বেশি বের হওয়ার মাধ্যমে তরলের ওজনটা হ্রাস পাবে। পানি পানে আবারো দেহে সেই ওজন যোগ হবে।
অন্যদিকে, কম ঘাম ঝরানো ব্যায়ামটাকে মোটেও মূল্যহীন মনে করবেন না। মনে করবেন না যে এতে ক্যালোরি যায়নি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ব্যায়াম করলে ঘাম কম হতে পারে। আবার ঘুম দ্রুত শুকিয়েও যেতে পারে। একইভাবে ফ্যানের বাতাসে বা বাতাসপূর্ণ পরিবেশে ব্যায়াম করলে ঘাম কম হবে।
ঘামের বিষয়টি পোশাকের ওপর নির্ভর করে। পলিস্টার বা লিক্রার মতো সিনথেটিক কাপড়ে ঘাম কম উৎপন্ন হচ্ছে বলেই অনুভূত হয়। ত্বক থেকে ঘাম বেরোলে এই কাপড় তা বাষ্পীভূত হতে সহায়তা করে। কিন্তু সূতির কাপড়ে তেমনটা হয় না। এটি ময়েশ্চার শুষে নেয়, কিন্তু বাষ্পীভূত হতে কোনো ভূমিকা রাখে না। তাই সূতির কাপড় পরে ব্যায়াম করলে শরীরটা পুরো ভিজে যাবে। অবশ্য সিনথেটিক কাপড় অনেক বেশি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে।
সূত্র: সিএনএন