বৃহস্পতিবার   ১২ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৮ ১৪৩১   ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেনী মামলার হওয়ার ০৮ ঘন্টার মধ্যে আসামী গ্রেফতার

মিজানুর রহমান মিজান

প্রকাশিত : ০৬:৪০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

বাদী মাঈন উদ্দিন তাহার চতুর্থ শ্রেণীতে পড়–য়া পূত্র সন্তান আহনাফ আল মাঈন প্রঃ নাশিত (১০) গত ০৮/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ রাত্রি অনুমান ১৯.৩০ ঘটিকার সময় প্রাইভেট পড়া শেষে বাসায় ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করিয়া ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী নং- ৬৩৪, তাং- ০৯/১২/২০২৪খ্রিঃ দায়ের করেন।

সাধারণ ডায়েরী নং- ৬৩৪, তাং- ০৯/১২/২০২৪খ্রিঃ এর প্রেক্ষিতে সদর মডেল  থানার এসআই আব্দুস ছাত্তার’কে নিখোঁজ ভিকটিম আহনাফ আল মাঈন প্রকাশ নিশাত (১০) কে উদ্ধারের জন্য বাদীর সাথে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করিতে থাকে। অতঃপর ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজি করাকালে অজ্ঞাতানামা বিবাদী/বিবাদীরা রাত্র ২১.১৭ ঘটিকার সময় হইতে বাদীর হোয়াটসঅ্যাপ-এ বিভিন্ন মেসেজের মাধ্যমে ভিকটিমের মুক্তিপণ বাবদ ১২(বার)লক্ষ টাকা দাবি করে। এ-প্রেক্ষিতে বাদী থানায় আসিয়া ভিকটিমের অপহরণ ও মুক্তিপণ বিষয়ে এজাহার দায়ের করিলে ফেনী মডেল থানার মামলা নং-১২, তাং-১১/১২/২০২৪খ্রিঃ, ধারা-৭/৮/৩০, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০(সংশোধিত-২০২০) রুজু হয়। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ফেনী জেলার পুলিশ সুপার জনাব হাবিবুর রহমান এর দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ্্স) জনাব নোবেল চাকমা, পিপিএম এর নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ ফেনী মডেল থানা মর্ম সিংহ ত্রিপুরা, অফিসার ইনচার্জ, ফেনী জেলা গোয়েন্দা শাখা, মোঃ সামসুজ্জামান, ফেনী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) মোঃ ইকবাল হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিরস্ত্র) আব্দুস ছাত্তার, ফেনী মডেল থানার এসআই(নিরস্ত্র)/ মোঃ মোতাহের হোসেন ও ডিবির এসআই(নিরস্ত্র) স্বপন কুমার দাশ সহ অন্যান্য অফিসার ও ফোর্স সহ একটি টিম গঠন করিয়া তদন্ত ও অভিযান কালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত সন্ধিগ্ধ আসামী ০১। আশরাফ হোসেন তুষার (২০) কে আতিকুল আলম সড়ক এবং ০২। মোঃ মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ০৩। ওমর ফারুক রিফাত (২০) দ্বয়কে বিসিক এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম আহনাফ আল মাঈন প্রঃ নাশিত (১০) কে গত ০৮/১২/২৪খ্রিঃ রাত ১৯.৩০ ঘটিকার সময় ১নং আসামী আশরাফ হোসেন তুষার (২০) ও ২নং আসামী মোঃ মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সু-কৌশলে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে আতিকুল আলম সড়ক হইতে সালাউদ্দিন মোড় সংলগ্ন রেললাইনে নিয়া আসে। ২নং আসামী মোঃ মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) যোগাযোগ করিয়া ০৩নং আসামী ওমর ফারুক রিফাত (২০)কে ঘটনাস্থলে আনিলে সকল আসামীগণ ভিকটিমকে সালাউদ্দিন মোড় সংলগ্ন রেললাইনে নিয়া যায়। আসামীগণ ভিকটিমের ছবি এবং ভিডিও বাদীকে প্রেরণ করিয়া ১২(বার) লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। ১নং আসামী আশরাফ হোসেন তুষার (২০) এর নির্দেশনা মতে ২নং আসামী মোঃ মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) জুসের সাথে ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে পান করাইলে ভিকটিম ঘুমিয়ে পড়ে। ভিকটিম নিশাত এর ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর বাড়ীতে চলিয়া যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করিলে আসামীগণ রেললাইন  সংলগ্ন ঝাউবনে নিয়া পরষ্পর মিলিয়া ভিকটিমকে গত ১২/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০১.৩০-২.৩০ ঘটিকার সময় শ্বাসরোধ করিয়া হত্যা করে। ভিকটিম  যেহেতু আসামীদের পুর্ব পরিচিত  ছিল, তাই আসামীগণ ভিকটিমকে ছেড়ে দিলে জানাজানি হবে ভেবে ভয়ে ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। উক্ত হত্যার ঘটনা আড়াল করার জন্য আসামীগণ ভিকটিমের ব্যাগের ভিতর পাথর ভর্তি করিয়া সেটি ভিকটিমের কাঁেধ চাপিয়ে ঝাউবন সংলগ্ন কুচুরিপানা ভর্তি ডোবায় লাশ ফেলে দেয়। ইং ০৯/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ দিনের বেলায় আসামীরা ডোবায় পাশের্^ যাইয়া লাশ যথাযথ স্থানে আছে কিনা যাচাই করিতে যায়। আসামীরা ১০/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ ডোবা হইতে সিএনজি যোগে লাশ অন্যত্র নেওয়ার পরিকল্পনা করিলেও স্থানাস্তর করিতে পারে নাই। ভিকটিমকে হত্যার করার পরও আসামীরা বাদীর নিকট পূর্বের মুক্তিপনের টাকা দাবি করিতে থাকে। বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে অত্র মামলা রুজু হওয়ার ০৮ ঘন্টার মধ্যে অত্র মামলার ঘটনার সহিত জড়িত আসামীগণ গ্রেফতার, ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার ও মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করিতে সক্ষম হয়।