বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বেনাপোলে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত কম,রাজস্ব আদায়ে বড় ধ্বস

নাসিম আক্তার, বেনাপোল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০১:২৩ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দু-দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত দিনদিন ক্রমেই কমে আসছে। ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপ করায় যাত্রী যাতায়াত কমে অর্ধেকের নিচে নেমেছে গেছে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে যাত্রী যাতায়াত কিছুটা কমে গেলেও বর্তমানে ভারতীয় দূতাবাস ভিসা প্রদান না করায় এই খাতে রাজস্ব আদায়ে বড় ধ্বস নামতে শুরু করেছে। 

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ বন্দরের এই চেকপোস্ট দিয়ে ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভ্রমণ কর থেকে বছরে প্রায় ২০০কোটি টাকার রাজাস্ব আয় আসে। গত ৫ আগস্টের আগে প্রতিমাসে এই খাতে প্রায় ১৫ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আয় হতো। বর্তমানে সেটা কমে ৩ কোটিতে নেমে এসেছে। একই সময় আগে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজারের মতো যাত্রী যাতায়াত করতো। বর্তমানে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে অর্ধেকেরও নিচে।

 

বেনাপোল থেকে কোলকাতার দুরত্ব কম হওয়ায় অধিকাংশ পাসপোর্ট যাত্রীরা এই পথে ভারতে যেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে থাকেন। ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীদের অধিকাংশই রোগী। তবে ট্যুরিস্ট, বিজনেস,স্টুডেন্ট যাত্রীদের সংখ্যা নেই বললেই চলে। ভারত সরকার ভিসা বন্ধ করে দেয়ায় বেকায়দায় পড়েছে রোগীরা। ভারত সরকার বিজনেস ভিসা না দেওয়াতে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পরতে শুরু করেছে। অনেক আমদানিকারকের ভিসারমেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

 

আমদানিকারক আল মামুন জানান, আমার বিজনেস ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি ওপারের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে না পারার কারণে যে পণ্য অর্ডার করছি সেই পণ্যের গুনগত মান সঠিক পাচ্ছিনা। এছাড়া এলসি দেওয়ার পরেও যথাসময়ে পণ্য রপ্তানি করছে না ওপারের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ওপারে যেতে না পারার কারণে আমার ইনভয়েস অনুযায়ী পণ্যের সঙ্গে রপ্তানিকারকের পণ্যের মিল হচ্ছে না। এতে করে আমি একজন আমদানিকারক হিসেবে ব্যবসায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমি দ্রুত ভিসা না পেলে সামনের দিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

ভারতে চিকিৎসার জন্য আসা যাত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, আবেদনের দীর্ঘদিন পর কোন রকম চিকিৎসার জন্য মেডিকেল ভিসা পেয়েছি। আমি চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছি। বর্তমানে ভিসার খুব সমস্যা, ভ্রমন ভিসা একদমই নেই। আগামী দিনে আর ভিসা পাব কিনা সন্দেহ আছে। 

ভারতগামী যাত্রী অর্পিতা ঘোষ বলেন, আগে ইমিগ্রেশনে দেখতাম অনেক যাত্রীদের ভিড় থাকতো। কিন্তু আজ এসে দেখলাম যাত্রী একেবারে নেই বললেই চলে। খুব নিরিবিলিভাবে ভারতে যাচ্ছি। এখন যেহেতু ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।আমার ভিসা শেষ পর্যায়ে। পরবর্তীতে আর ভিসা পাব কিনা বলতে পারছিনা। 

 

 

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ  ভূঁইয়া জানান, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর এবং ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপ করায় যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।শনিবার (৯ নভেম্বর) বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দু-দেশের মধ্যে মাত্র ১৫৩৩ জন যাত্রী যাতায়াত করেছে।যেখানে আগে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতো।