খন্দকার মোশাররফ ও তার ভাইসহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:৫০ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন (৭৫) এবং তার ছোট ভাই ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেনসহ (৭০) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের এক নম্বর আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. দিলদার হোসেন সবুজ (৫০)।
মামলার এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান (৫৮), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম (৩৫), ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্ত খান (২৮) ও অমিত সরকার (২১), শহরের আলীপুর মহল্লার মো. সাদ্দাম সৌমিক (২৭), কমলাপুরের তানজির হাসান (৩০), অম্বিকাপুরের রবিউল মোল্লা (৪৫), লিটন মোল্লা (৩২) ও শাহীনুজ্জামান (২৮), ফরিদাবাদের সুমন খান (৩৬), ভাটিলক্ষ্মীপুর সাজিদ খান (২৪), চৌধুরী ডাঙ্গীর জহুরুল শেখ (৩২) ও আতিয়ার শেখ (৩০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে সকল মানুষের সকল ধর্মের সকল নিবন্ধিত দলের শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদনের অধিকার রয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ সকাল ৭টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক দল ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ২০০/৩০০ জন নেতা-কর্মী পুষ্পমাল্য নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে গোয়ালচামটে অবস্থিত শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণসহ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। ফিরে আসার পথে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের কাছাকাছি পৌঁছানো মাত্র খন্দকার মোশাররফের নির্দেশে খন্দকার মোহতেসাম হোসেনের হুকুমে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে আসামিরা চাপাতি, রামদা, হকিস্টিক, লোহার হাতুড়ি, লোহার পাইপ ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি করে অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে এসে গতিরোধ করে সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েলকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথার ডান পাশে সজোরে কোপ দিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ সময় জুলফিকারের সঙ্গে তিনিও (বাদী) ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন।
পাঁচ বছর পর মামলা দায়েরের প্রেক্ষাপটের বিবরণ দিয়ে বাদী দিলদার হোসেন এজাহারে বলেন, আওয়ামী স্বৈরশাসক সকল থানা প্রশাসন ও বিচার বিভাগ কুক্ষিগত করে রাখায় মামলা করতে পারেননি। এজন্য মামলা করিতে বিলম্ব হইল।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী হাবিব শেখ বলেন, ওই আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট নাসিম মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত করার জন্য ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি শুনেছি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলার কপিসহ আদালতের নির্দেশনা আমি এখনো পাইনি। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের শ্বশুর ছিলেন।