আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১১:৩৯ এএম, ২৯ জুলাই ২০২৪ সোমবার
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর আজ থেকে গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি এ রিট দায়ের করেছেন।
রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে দুপুর ১২টায় এর শুনানি হবে।
এর আগে গেল ১০ দিন আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে র্যাব। তবে হেলিকপ্টার থেকে কোনো প্রকার গুলি বা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।
র্যাব জানায়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে গত ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। শাটডাউনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ ও নাশকতার মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি, সরকারি ও জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালায়।
একইসঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার (২৮ জুলাই) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীদের মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, নাশকতা ও নাশকতাজড়িত পরবর্তী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত ১৮ জুলাই গঠিত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় বেশ কয়েকটি বিভাগীয় তদন্তও পরিচালিত হচ্ছে।
তবে সাম্প্রতিক সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, কখনো বলা হচ্ছে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসলে মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ছাত্র কতজন এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। আরও যাচাই করে তথ্য জানানো হবে।
নিহতদের মধ্যে কতজন নারী, কতজন পুরুষ কিংবা কোন পেশার মানুষ কতজন সেটি নির্ণয়ের কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, বর্বরোচিত আক্রমণ পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ দেখেছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা এও দেখেছি তারা একটা হসপিটাল পর্যন্ত রেডি রেখেছে, কেউ ইট কিংবা লাঠির আঘাতে আহত হলে তাদের সেখানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আবার তাদের ভালো করে আরেক দল এসেছে। আগে থেকে একটা প্ল্যান ওয়েতে আক্রমণগুলো করেছে।
নিহতের সংখ্যা নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলছেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এ কয়দিনের আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের একটা তালিকা আমাদের কাছে আছে। এটি আমরা আরও যাচাই-বাছাই করছি। আরও যদি দু’একজনের খবর পাই তবে তা আমরা অন্তর্ভুক্ত করব।