আনাস রা.-এর জন্য যে দোয়া করেছিলেন প্রিয়নবী সা.
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত : ০৮:২৫ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪ রোববার
![](https://www.dailytorunkantho.com/media/imgAll/2018November/Untitled-19-copy-2406231425.jpg)
মুসলিমদের মাঝে জনপ্রিয় ও পরিচিত অন্যতম একজন সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালেক রা.। তিনি রাসূল সা. সেবক সাহাবিদের একজন ছিলেন। টানা ১০ বছর রাসূল সা.-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
তিনি একাধারে কারি, মুফতি ও মুহাদ্দিস ছিলেন। অঢেল সম্পদ ও অধিক সন্তানের গর্বিত পিতা ছিলেন তিনি। তাঁর উপনাম আবু হামজা ও আবু সুমামা। বাবার নাম মালেক। মা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান রা.।
হিজরতের ১০ বছর আগে মদিনায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স যখন আট থেকে ৯ বছর তখন তাঁর মা ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী ও পুত্রকে ছেড়ে সিরিয়ায় চলে যান এবং সেখানেই কুফরি অবস্থায় মারা যান।
রাসুল (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন তখনই আনাস (রা.) রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। তখন তাঁর বয়স ১০ বছর।
কিছুদিন পর তাঁর মা তাঁকে নিয়ে উপস্থিত হলেন রাসুল (সা.)-এর দরবারে। বলেন, আনসারদের নারী-পুরুষ প্রত্যেকেই আপনাকে কিছু না কিছু হাদিয়া দিয়েছে; আমি তো কিছু দিতে পারিনি।
আমার আছে এই ছেলে। সে লিখতে জানে। আপনার খিদমতের জন্য একে কবুল করে নিন। সেদিন থেকে আনাস (রা.) রাসুল (সা.)-এর খিদমতে আত্মনিয়োগ করেন এবং রাসুল (সা.)-এর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একটানা ১০ বছর খিদমত করেন।
একদিন রাসূল (সা.) আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইমের ঘরে এলেন। ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে নফল নামাজ আদায় করলেন আর উম্মে সুলাইম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের জন্য দোয়া করেন। এই সুযোগে উম্মে সুলাইম (রা.) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার একটি প্রিয় ছেলে আছে, তার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করুন। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, কে সে? বলেন, আপনার খাদেম আনাস।’
অতঃপর রাসুল (সা.) তাঁর জন্য এমনভাবে দোয়া করেন, যাতে দুনিয়া-আখিরাতের কোনো কল্যাণের বিষয় বাদ দেননি। নবীজি দোয়া করেন—
اللَّهُمَّ أَكْثِرْ مَالَهُ وَوَلَدَهُ، وَبَارِكْ لَهُ فِيمَا أَعْطَيْتَهُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আকছির মা-লাহু, ওয়া-বারিক লাহু ফি-মা আ’তাইতাহু।
অর্থ : ইয়া আল্লাহ! আপনি তার সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিন। আর তাকে আপনি যা কিছু দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন। (বুখারি : ২/২৬৬)
রাসূল (সা.)-এর এই দোয়ার বরকতে তিনি সুদীর্ঘ হায়াত, অঢেল সম্পদ ও অনেক সন্তান লাভ করেন। ৯০ মতান্তরে ১০৩ বছর হায়াত লাভ করেন।
তাঁর বংশ থেকে ১০০ জন, মতান্তরে ৮০ জন সন্তান (৭৮ ছেলে ও দুই মেয়ে) জন্মলাভ করে। (মিশকাত, আসমাউর রিজাল : ৫৮৫)