ধলাইয়ের বুকে সরিষার আবাদ
সোহেল আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ সিলেট:
প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ৫ জানুয়ারি ২০২৪ শুক্রবার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ বালু পাথরের দেশ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। যেখানে সারাক্ষণ পাথরের ঝনঝনানির শব্দ আর বালু পরিবহনের গাড়ির শব্দ শুনে অভ্যস্ত। পাথর উত্তলন বন্ধ থাকায় ঘটেছে তার উল্টু চিত্র। যেই ধলাই নদী থেকে পাথর উত্তলন হতো। যে জায়গা দিয়ে গাড়ি চলাচলের কথা সেখানেই আবাদ হচ্ছে কৃষি ক্ষেত। পাথরের গাড়ির পরিবর্তে এই ধলাইর বুকে হেলে ধুলে খেলা করছে সরিষা ফুল।
সরিষা ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ সবাই! দূর থেকে দেখলে মনে হয় প্রকৃতি হলুদ চাদর পেতে রেখেছে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থাৎ শীতকাল আসতেই ফুটে ওঠে সরিষা ফুল। এ সময় যেদিকেই চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। যদিও গ্রামে সরিষা ক্ষেতের দেখা মেলে সবখানেই। তবে শহরবাসীদেরকে এজন্য আফসোস করতে হয়। বর্তমানে সরিষা ক্ষেত দেখা ও ছবি তুলতে যাওয়ার জন্য সবাই উতলা।
ধলাই ব্রিজের নিচ থেকে প্রায় ১২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়। সেখানকার কৃষকরা বলেন ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে খরছ হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। প্রতি বিঘায় ৭-৮ মণ ফলন হয় সরিষার, যা বর্তমান বাজারে বিক্রি হবে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তারা বলেন, ধলাই নদীর পানি শুকিয়ে গেলে জমিগুলো পড়ে থাকে, তাই প্রতি বছর সরিষা চাষ করি।
সরিষা চাষে সময় আর খরচ দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় সরিষা চাষ। গত কয়েক বছরে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে শস্যটির ফলনও আগের চেয়ে বেড়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে দিন দিন বাড়ছে সরিষার চাষ। বাজারে দাম ভালো থাকায় সরিষায় আশার আলো দেখছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে কৃষি অফিসার মো: আব্দুল মুতিন বলেন, এ বছর কোম্পানীগঞ্জে ৮২২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন না কমিয়ে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করলে দেশের কৃষিখাত বিরাট উপকৃত হবে। আমরা বছরে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করি। এজন্য অনেক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। সরিষা চাষ বাড়ালে দাম নিয়ে সমস্যা হবে না। কৃষকরাও লাভবান হবেন। দেশের টাকা দেশেই থাকবে। আমাদের চাহিদার চেয়ে বেশি এবছর সরিষার আবাদ হয়েছে।