ঠাকুরগাঁওয়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে নবান্ন উৎসব
মো. সুমন হাসান বাপ্পি (ঠাকুরগাঁও ) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত : ০৫:৫০ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ রোববার

চলতি আমন মৌসুমে ধান কাটা শেষ। পাকা ধান ঘরে তুলছেন চাষীরা। সোনালি ধানের ঘ্রাণে ভরে আছে কৃষকের আঙ্গিনা।
শীত আসার আগে ভাগে ধান ঘরে তুলতে পেরে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। ধান ক্ষেতের ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধান বের করছে শিশুরা।
এসব ধান কুড়ানি শিশু- কিশোরা প্রতিদিন দল বেঁধে ছুটে যায় ফসলের মাঠে। চলতি মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই ঘিরে যখন গৃহস্থ পরিবারের উৎসব চলছে।
ঠিক তখনই ভূমিহীন পরিবারগুলোর শিশুরা খুঁজে বেড়াচ্ছে কৃষকের কেটে নেওয়ার সময় ঝরে পড়া ধান। সকাল বা বিকাল কিংবা মিষ্টি রোদে হাতে ব্যাগ ও কাঁধে কোদাল আর বাশিলা নিয়ে মাঠে ছুটছেন তারা।
সারাদিন সংগ্রহ করছেন ৭ থেকে ১০ কেজির মতো ধানের শিষ কুড়িয়ে থাকে। যখন ধানের পরিমাণ বেশি হয় তারা বেচে দেয়। অনেকে আবার পিঠাপুলি খাওয়ার জন্য জমিয়ে রাখে সেই ধান। এ ধান কুড়িয়ে কারো আবার বছরের একবেলা খাবার কিংবা বছরে অন্তত একদিন পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়।
ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া গ্রামের ক্ষেতগুলোতে ধান কুড়াতে ব্যস্ত শিশু সেলিম (১০) গুলজার (৮) ও সাদেকুল (৭)
ওদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, কৃষকরা যখন ক্ষেত থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক ধানের ছড়া এমনিতেই পড়ে থাকে সেগুলো আমরা কুড়িয়ে থাকি। এছাড়াও ক্ষেতে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে পাওয়া যায় অনেক ধান।
কৃষক আজিজুল বলেন, আগে মাঠ জুড়ে ধান কুড়ানি শিশুদের আনাগোনা ছিল অনেক বেশি। এক সময়ে ধান কাটার একটা উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল।
এখন সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে, শিশুরা এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। আগের সেই দৃশ্য আর দেখা যায় না।
ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধান সংগ্রহ করতে আসা সেলিম হোসেন (১০) বলেন, আমার বাবা মা অন্যের জমিতে কাজ করেন । আমন মৌসুমে আমরা খেত-খামার থেকে ধানের শিষ সংগ্রহ করি। অভাব অনটনের সংসারে ধান কুড়িয়ে শীতের সময় পিঠা খাব।