বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজউকের ইমারত পরিদর্শক বাসুদেবের দুর্নীতি

আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী:

প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সোমবার

রাজধানীর ধলপুরে ২৫, নতুন রাস্তা খালপার এলাকায় বহুতল ভবনের মালিকগণ আনোয়ার, জামাল গং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের আশীর্বাদে পরিতুষ্ট। তাদের একটি বহুতল ভবনের অনুমোদিত বিল্ডিং প্লানের চেয়ে অতিরিক্ত তলা বেশি করার কারণে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী জোটন দেবনাথ, জোন-৬/১, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর নেতৃত্বে রাজউকের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান ইমারত পরিদর্শক মোঃ আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী ওরফে নান্নু সাহেবের সহযোগিতায় রাজউক প্রধান কার্যালয় থেকে বর্তমানে বদলীকৃত স্থান জোন-৪, মহাখালী আঞ্চলিক অফিসে কর্মরত ইমারত পরিদর্শক বাসুদেব ভট্টাচার্য‌ বিল্ডিং এর‌ নিচের তিনটি তলা ভেঙে ফেলে কাজ বন্ধ করে দেয়।

রাজউক এর ইমারত পরিদর্শক বাসুদেব ভট্টাচার্য তত্ত্বাবধানে থাকা সত্ত্বেও কিভাবে বিল্ডিং মালিক গং অতিরিক্ত তলা করেছে তা বোধগম্য নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানা যায়, ইমারত পরিদর্শক বাসুদেব ভট্টাচার্যকে বিভিন্ন ধাপে একত্রিশ লক্ষ টাকা উৎকোচ দিয়ে তার পরামর্শ ক্রমে তারা রাজউক এর বিল্ডিং নীতিমালা অবজ্ঞা করে অতিরিক্ত তলার কাজ করতে থাকে। ইমারত পরিদর্শক বাসুদেব তাদেরকে আশ্বস্ত করে অফিস আমি ম্যানেজ করতেছি আপনারা কাজ চালায় যান। আবার, রাজউকের কাছে অভিযোগ আসলে বিল্ডিং না ভাঙতে তারা রাজউক কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করতে না পারায় রাজউকের অভিযানের হাত থেকে তাদের বহুতল বাড়ি ভাঙ্গা থেকে বাঁচাতে পারে নাই।
বাড়ির নিচের তিন তলা ভাঙ্গার পরেও বাসুদেবের পরামর্শে বাড়ির গেট লাগিয়ে ভিতরে মিস্ত্রি দ্বারা কাজ করছে বলে দেখা যায়। এই বিষয়ে বাসুদেব এর কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন, আমি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন কিছু বলতে পারব না, আমি এখন ঐ খানে নাই। পরবর্তীতে উনি রাগ করে বলেন, টাকা তো আমি একা খাই নাই, অফিস কর্তৃপক্ষ জড়িত আছে। আপনি এই ব্যাপারে নান্নু সাহেব ও প্রকৌশলী জোটন দেবনাথ এর সাথে কথা বলতে পারেন। পরে, এই বিষয়ে রাজউকের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান ইমারত পরিদর্শক মোঃ আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী ওরফে নান্নু সাহেবের কাছে জানতে চাওয়া হলে, উনি বলেন আমি এই বিষয়ে জানি, আপনি আইসেন।

দুর্নীতি ও অনিয়মে রাজউকের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী আজ ফুলেফেঁপে বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক বনে গেছে। মার্চ ২০০৮ সালে ইমারত পরিদর্শক হিসেবে রাজউকে চাকরি নেওয়া জনাব বাসুদেব ভট্টাচার্য, পিতা-মৃত সুখেন্দু ভট্টাচার্য, বর্তমান ঠিকানা ৫০/১, আরামবাগ, ঢাকা। স্থায়ী ঠিকানাঃ খেম হস্র, কর্নিঘাম, মৌলভীবাজার। বাসুদেব ভট্টাচার্য সহ আরো কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির ফিরিস্তি পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে।

রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের দ্বারা দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডে ঢাকা শহরের বেশ কিছু বাড়ীর মালিকগণ আজ দুশ্চিন্তায় দিনানিপাত করছে।‌ রাজউক কর্তৃপক্ষ এবং তার অধীনস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীগণ রাজউকের নীতিমালা অনুযায়ী চললে, ঢাকা শহরকে সুন্দর ভাবে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু, দুর্নীতি ও অনিয়মের বেড়াজাল রাজউক কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে এবং জনসাধারণের মনে অসন্তোষের জন্ম দেয়। রাজধানীর শত শত বিল্ডিং এ রাজউকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দ্বারা এমন কর্মকান্ডে জনসাধারণ আজ চরম বিব্রত ও অস্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছে।
জনসাধারণের ভাষ্যমতে রাজউক কর্তৃপক্ষ এখন চোরকে বলে চুরি করতে আবার মালিক কে বলে সজাগ থাকতে। যেখানে প্রতিয়মাণ হয় রাজউকের ভোগ বিলাসের আড়ালে জনগণের নাভিশ্বাস। যা ক্রমশ সরকার, রাজউক তথা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে।