দুই দফা দাবিতে শাওনের মৃত্যুর বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে জবি মানববন্ধ
আহমেদ সানি, জবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৮:৪৬ পিএম, ১০ মে ২০২৩ বুধবার

দুই দফা দাবিতে শাওনের মৃত্যুর বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে জবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় তিতাস গ্যাস লাইনের লিকেজ ও ওয়াসার কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আরএফএলের অবহেলার কারনে গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওনের মৃত্যুতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শাওনের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ মে ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দুপুরে এ মানবন্ধনের আয়োজন করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে গ্যাস লাইনে দীর্ঘদিন যাবৎ লিকেজ থাকা সত্বেও সেখানে ওয়াসা কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আরএফএল এর গাফেলতির কারনেই শাওনের এই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এটাকে আমরা স্বাভাবিক মৃত্যু বলতে পারি না এটা একটি হত্যাকান্ড।
এসময় সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম সাঈদ প্রশাসন বরাবর দুই দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো: যাদের গাফলতি ও অসতর্কতার কারনে শাওনের মৃত্যু হলো সেই ওয়াসা ও তিতাস কতৃপক্ষকে যথোপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং দ্রুত তা বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবারের একমাত্র ছেলে হারানো শাওনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে ও কোনো প্রকার গড়িমসি না করে সেটি যত দ্রুত সম্ভব তাদের হাতে তুলে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তিতাস-ওয়াসার যে গাফলতির কারনে শাওনের মৃত্যু হলো তাকে নিছক দূর্ঘটানা নয়, হত্যাই বলা চলে। তিনি এই ২ দফা দাবি যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নের অনুরোধ করেন।
মানববন্ধনে জান্নাত মেহেবুবা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এ দুর্ঘটনার দায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেনা। তাদের অসাবধানতার জন্য আমাদের ভাইকে হারাতে হল। আমরা এর বিচার ও শাওনের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ চাই।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ধূপখোলার বিষ্ফোরনে ঘটনায় আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাওন নিহত হয়েছে। সে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চারদিনের আইসিইউতে ভর্তি ছিল। চিকিৎসারত অবস্থায় শাওন মারা যায়। আসলে এ ধরনের মৃত্যু কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গেন্ডারিয়া থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। আমরাও চাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করতে। মামলার জন্য সকল প্রস্তুতি আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। আমরা শাওনের চাচার সাথে কথা বলেছি। ওর বাবা-মায়ের এনআইডি আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। কুরিয়ারের মাধ্যমে ওকালতনামা ওদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। স্বাক্ষর করে আমাদের কাছে আজই পাঠানোর কথা রয়েছে। তারপরই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করবো।
উল্লেখ্য গত ১ মে সকালে রাজধানী পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা বাজারে রাস্তার থাকা গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সময় তিনি ধূপখোলায় বাজার করতে গিয়েছিলেন। এতে মেহেদী হাসান দগ্ধ হয়ে শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায়। তাকে সেদিন থেকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় গত ৬ মে সকালে শাওনের মৃত্যু হয়।