রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৬ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

পতনের পর গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বড় লাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার

লভ্যাংশকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড’র বড় দরপতন হয়। এক সপ্তাহে দাম কমে যায় ২৪ শতাংশের ওপরে। এমন বড় দরপতনের পর গত সপ্তাহে মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির দামে আবার বড় উত্থান হয়েছে। এক সপ্তাহে ফান্ডটির দাম বেড়ে গেছে ২০ শতাংশ।

গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দামে উত্থান হলেও গত সপ্তাহে সার্বিক শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার ১০ গুনের বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। এতে পতন হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের।
আরও পড়ুন: বাজার মূলধন কমলো দেড় হাজার কোটি টাকা

এই পতনের বাজারে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের পছন্দের শীর্ষ চলে আসে গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এই মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি।

গত সপ্তাহজুড়ে ফান্ডটির দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি ইউনিটের দাম বেড়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির ইউনিটের দাম দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৭ টাকা ৫০ পয়সা।

আরও পড়ুন: এক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ যত প্রভাব

এর আগে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে ফান্ডটির দাম কমেছে ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি ইউনিটের দাম কমেছে ২ টাকা ৪০ পয়সা। মূলত ফান্ডটির ঘোষণা করা লভ্যাংশে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হওয়ায় ওই দরপতন হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ফান্ডটির ট্রাস্টি ডিএসই’র মাধ্যমে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের জন্য ১ দশমিক ২০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর এটিই মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির প্রথম লভ্যাংশ ঘোষণা। নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা করায় ১৫ ফেব্রুয়ারি ফান্ডটির ইউনিটের দাম এক ধাক্কায় ৩০ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৩ টাকা কমে যায়। তবে পরের কার্যদিবস ১৬ ফেব্রুয়ারি ফান্ডটির দাম ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ বাড়ে। আর গত সপ্তাহজুড়ে বাড়লো ২০ শতাংশ। এরপরও ফান্ডটি লভ্যাংশ ঘোষণার আগের দামে ফিরতে পারেনি। লভ্যাংশ ঘোষণা আসার আগে ফান্ডটির দাম ছিল ৯ টাকা ৯০ পয়সা।

আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তূপে টিকে থাকলো সাত প্রতিষ্ঠান

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল রূপসী বাংলায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। ওইদিন ঘণ্টা বাজিয়ে ফান্ডটির লেনদেন শুরুর ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। পরের দিন ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে ফান্ডটির লেনদেন শুরু হয়।

ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএল) এবং আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জন্য এই মিউচুয়াল ফান্ডটি চালু করে।

আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০০ কোটি টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা হিসেবে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএল) ৫০ কোটি টাকা এবং আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইসিবি এএমসিএল) ২০ কোটি টাকা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু-মেট্রোরেল প্রকল্পের অবৈধ বিমা

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) প্রি-আইপিও প্লেসমেন্টের ৫ কোটি টাকা দেয়। বাকি ২৫ কোটি টাকা সব বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। যা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। ফান্ডটির ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে এই গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে আসা হয়। গত বছরের ৩১ মার্চ সিএমএসএফ ফান্ডের ট্রাস্ট ডিড এবং বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা চুক্তির বিষয়ে বিএসইসি অনুমোদন দেয়।

আর ১১ এপ্রিল একটি ট্রাস্ট ডিড সই হয়। ‘আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড’র স্পন্সর হয় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড এবং সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে আছে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। এছাড়া ফান্ডটির কাস্টোডিয়ান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড এবং ট্রাস্টি হিসেবে বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে।

এদিকে দাম বাড়লেও গত সপ্তাহে মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির খুব একটা লেনদেন হয়নি। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পরই গত সপ্তাহে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে এমারেল্ড অয়েল।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- মুন্নু এগ্রোর ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্ন ডাইংয়ের ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ২ দশমিক ২৬ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের ২ দশমিক ২৩ শতাংশ, আমরা টেকনোলজির ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ, জুন স্পিনার্সের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং এসসিসিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড-১ এর ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।