বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১   ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাগ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন

প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ রোববার

রাগ আমাদের জীবনের এক মহাশত্রু। অতিরিক্ত রাগ রক্তচাপও বাড়িয়ে দেয়। রেগে গেলে আমাদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম কিছুটা ওলটপালট হয়ে যায়। আর এর থেকেই বাড়ে শরীর ও মনের নানা অসুবিধা। 

আজকের দ্রুতগতির জীবনে মানসিক চাপ বাড়ছে, এর যথাযথ মোকাবিলা না করতে না পারলেও রাগ বাড়ে। মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় রাগ হল নেগেটিভ ইমোশন। রেগে গিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ তীব্র হলে সমস্যা হয় তখনই। 

অনেকেই বলেন রাগ নাকি তাঁর বংশগত। কিন্তু মনোবিজ্ঞান বলছে ব্যাপারটা পরিবেশগত। শিশু যদি ছোটবেলা থেকে দেখে যে রাগ হলে বাবা অথবা মা চিৎকার করে, হাতের কাছে যা পায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়, তা হলে বাচ্চার রাগের বহিঃপ্রকাশ হবে একই রকম। তাই রাগ হলে চেষ্টা করতে হবে যত সম্ভব কম উত্তেজিত হতে। আসলে রাগ আর উত্তেজনা আমাদের শরীর ও মনের নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
রাগের কারণে হার্টের ক্ষতি বেড়ে যায়। কেননা, হার্ট রেট, ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। এমনকি রক্তে ফ্যাটি অ্যাসিডেরও মাত্রাধিক্য হয়। এর নিট ফল হার্টের ওপর বাড়তি চাপ। চণ্ডাল রাগের ঠেলায় চিৎকার চেঁচামেচি করে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এমন নজির আছে ভুরি ভুরি। তবে শুধু হার্টই নয় রাগের বহিঃপ্রকাশ তীব্র হলে মাইগ্রেন-সহ অন্যান্য মাথা ব্যথার প্রকোপ বাড়ে, হজম ক্ষমতা কমতে শুরু করে, থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে, চোখের প্রেশার বেড়ে গিয়ে দৃষ্টি শক্তি কমতে শুরু করে। যারা অল্প বিস্তর রাগেন ও নিজেরাই মাথা ঠান্ডা রেখে তার মোকাবিলা করেন তাঁদের খুব বেশি সমস্যা হয় না। কিন্তু যারা সামান্য কারণেই রেগে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করেন, ঘন ঘন রেগে ওঠেন তাঁদেরই বেশি সমস্যা হয়। আর এই কারণেই রাগ প্রশমন করতে হয়। 

রাগ হলে প্রথমেই নিজেকে সংযত করতে হবে। চিৎকার-চেঁচামেচি না করে জায়গা পরিবর্তন করুন বা সেই জায়গা থেকে অন্যদিকে চলে যান। ধীরে সুস্থে একগ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন।
যে কারণে আপনার রাগ হয়েছে সেই কারণটা মাথা থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে অফিসে বা বাড়িতে অন্য জায়গায় গিয়ে অন্য জনের সঙ্গে সম্পুর্ন নতুন বিষয় নিয়ে কথা বলুন। রাগের কারণ মাথায় আনাগোনা করলেও তাকে বেশি পাত্তা দেবেন না।
কিন্তু রাগের কারণ এমনই বিরক্তিকর যে কিছুতেই ভুলতে পারছেন না, যেখানে আপনার কোনও দোষই নেই, সেখানে ক্ষমাই পরম ধর্ম। স্রেফ ক্ষমা করে দিন, মনে করুন যার উপর রাগ হয়েছে তাঁর থেকে আপনি অনেক উচ্চ মানের। তাই রাগ করে নিজের শরীর, মন ও কাজের ক্ষতি করার কোনও মানে হয় না।