বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামতের বিকল্প নেই: নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০২:১২ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার

দেশে নাগরিকদের জন্য আইনের শাসন ও সুবিচার নিশ্চিত করতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামতের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, সরকার দলীয়করণের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস ও নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান মেরামতের কথা তো সংবিধানের প্রস্তাবনাতেই লেখা আছে। রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যেই বিএনপি ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ বিষয়ক এ পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।

নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে সরকার জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ তারা নাকি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাহলে জনগণ ভোট দিল কোথায়? আগের রাতেই ভোটের বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। যা সারাবিশ্বের লোকজন বলেছে। নির্বাচন কমিশনার নিজেও বলেছেন। ২০১৪ সালে তো ভোটকেন্দ্রে ভোটার খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, আজকে সরকারি দলের নেতারা বলছেন- বিএনপি নাকি রাষ্ট্র ভাঙচুর করেছে। রাষ্ট্র কি বস্তু? ধরা যায়? ছোঁয়া যায়? কিন্তু রাষ্ট্রের কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, এরই একটি হলো সংবিধান। যাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটা হলো সর্বোচ্চ আইন। এ ধরনের বিষয় নিয়ে রসিকতা করা যায় না।

নজরুল বলেন, আজকে যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্রের অবস্থা কী? গণতন্ত্রের প্রধান বাহন হলো নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে বাংলাদেশে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধীদলের প্রার্থীকে ভোট করতে দেওয়া হয় না। প্রচারণা চালাতে দেয়া হয় না। ভোট ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিজেই পল্লী বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু আজকের ক্ষমতাসীনরা কারও অবদান স্বীকার করতে চান না।

তিনি আরও বলেন, বিরোধীদলগুলো আজ সভা-সমাবেশ করতে পারে না। একটি প্রধান বিরোধীদলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য কারাগারে বন্দি। কোথায় আজকে ন্যায়বিচার? চারবার আবেদনের পরও জামিন নামঞ্জুর করা হয়।

নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার বলছে তারা সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে। এটা কি তারা করেছে? মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে কি শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে আবার বলা হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করবেন? এসব কি একসঙ্গে যায়?

তিনি বলেন, সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কী জিনিস তা মানুষ টের পেয়েছে। আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের কথা বলেন, আবার ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে চাচ্ছেন। যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে সরকারের বিরাগভাজন হওয়ায় পদচ্যুত ও দেশছাড়া করা হয় সে দেশের বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন? আমরা এসব বন্ধ করার লক্ষ্যেই রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছি।

নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা নিয়ে আরও যদি কারও কোনো প্রস্তাব থাকে সেগুলো বিবেচনা করা হবে। ২৭ দফায় বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেসব করা হবে যোগ্য ও দক্ষ লোকদের দিয়ে।

ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান ও দপ্তর সম্পাদক ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ইসমাইল জবিউল্লাহ ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ