বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

৩০ ডিসেম্বর ঘিরে বিএনপিতে হামলা-মামলার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার

অনেক আশঙ্কার মধ্যেও গত ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের গ্রেফতারেও থেমে থাকেনি সমাবেশ। ৩০ ডিসেম্বর সেই ঢাকায় আবার গণমিছিল কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। জেলা পর্যায়ের গণমিছিল খুব সুখকর ছিল না। ঢাকার কর্মসূচি ঘিরে তাই হামলা-মামলার আতঙ্কে কাটাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। তবে যত বাধাই আসুক যে কোনো কৌশলে এই গণমিছিল সফলভাবে শেষ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি।
দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ জাগো নিউজকে বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর জেলা পর্যায়ে দলের প্রথম গণমিছিল কর্মসূচি পালনের আগে নোয়াখালী থেকেই একসঙ্গে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতির পর সেভাবে মামলা-হামলার শিকার না হলেও গত ৭ ডিসেম্বরের পর থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
‘অতীতে হামলা-মামলার মাধ্যমে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেগুলো এখনো করছে সরকার। তবে মুক্তিকামী নেতাকর্মীরা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কৌশল অবলম্বন করে জয় নিশ্চিত করবে।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গণমিছিল কর্মসূচির আগে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিতে দেওয়া হয়েছে। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্যই হত্যা করা হয়েছে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফীনকে।

আরও পড়ুন>> বিএনপির সিনিয়র নেতাদের উচ্ছ্বাস, তৃণমূলে অবিশ্বাস!
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের দাবি, চেয়ারপারসন অফিসের স্টাফ, নিরাপত্তা সদস্য এমনকি ড্রাইভারও আসামি আছেন। মামলা সংখ্যা বর্তমানে দেড় লাখের কাছাকাছি। গ্রামের ওয়ার্ডে সদস্য থেকে শীর্ষ নেতা পর্যন্ত আসামি আছেন। কারও বিরুদ্ধে একশোর ওপর মামলা আছে।

বিএনপির দপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই মাসে সাড়ে তিনশোর অধিক মামলায় প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৫ জন।

আরও পড়ুন>> বিএনপি’র কূটনৈতিক তৎপরতা আন্দোলন নাকি নির্বাচনমুখী?
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির ৯১ গুরুত্বপূর্ণ নেতার নামে ১ হাজার ৭৫২ মামলা রয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে ৩৬, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৯৩, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৭, জমিরউদ্দিন সরকারের ৪, মাহবুবুর রহমানের ৩, রফিকুল ইসলাম মিয়ার ১৯, মির্জা আব্বাসের ৪৮, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ২৮, আব্দুল মঈন খান ১, নজরুল ইসলাম খান ৬, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ৬, সালাউদ্দিন আহমেদ ১২, বেগম সেলিমা রহমান ৪, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ৫, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান ১৩৪, মিজানুর রহমান মিনু ১৮, জয়নুল আবদিন ফারুক ১২, হাবিবুর রহমান হাবিব ১৫, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ৫, মৃত শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ৪, মৃত সাদেক হোসেন খোকা ২৭, শাজাহান ওমর ৭, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ৫, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ১১, বরকতউল্লা বুলু ৩৮, মো. শাহজাহান ১৭, মোসাদ্দেক আলী ফালু ৯, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ৪, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ১৭, শামসুজ্জামান দুদু ১১, আহমেদ আজম খান ৬, জয়নুল আবেদীন ১৮, নিতাই রায়চৌধুরী ৯, শওকত মাহমুদ ৫, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৪২, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ১৫, মজিবর রহমান সরোয়ার ১৪, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ১২৭, খায়রুল কবির খোকন ২১ , হাবিবুর নবী খান সোহেল ১৮৯, হারুনুর রশিদ ১৪, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ১৭, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুল ৪৭, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ১৯, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব দুলু ১৪, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ২, বিলকিস জাহান শিরিন ১৭, শ্যামা ওবায়েদ ৫, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ২, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ৪৭, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার ১১, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ৪, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ১৭, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ৩৬, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ৫, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ৯, নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ২২, ফজলুর রহমান খোকন ২১, ইকবাল হাসান শ্যামল ১৯, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী ৭, আকরামুল হাসান মিন্টু ১৪, তরিকুল আলম তেনজিং ৫ , সাইফুল ইসলাম নীরব ১২৬, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ১২৭, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না ১৪, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ৩২৪, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ২৭৭, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ১৪৬ , সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ৯৮, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান ৩, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ৪, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ৪৮, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ২৪, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান ১৭, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ১৭, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ১০ মামলার আসামি। এছাড়াও অনেক নেতা রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।