বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

বিএনপি নেতাদের মুখে সংস্কারের কথা হাস্যকর: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০৬:৪৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণকারী বিএনপি নেতাদের মুখে রাষ্ট্র মেরামতের কথা হাস্যকর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথন ‘কোড সামুরাই’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথন ‘কোড সামুরাই’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
বিএনপির ২৭ দফা প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ‘যারা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল আর ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিল; সেই বিএনপি নেতাদের মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা হাস্যকর।’

হাছান মাহমুদ বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার বলে তারা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে সেটা আমি দেখেছি। ১৩ নম্বর প্রস্তাবে আছে: দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপস করা হবে না। যারা পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, যাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত, তারা যখন এসব কথা বলে তখন মানুষ হাসে, গাধাও হাসে। খন্দকার মোশাররফ সাহেব তো ছাত্রলীগ করতেন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য ‘রাজনীতির কাক’রা সমবেত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিল। এই উচ্ছিষ্ট গ্রহণকারী নেতারা যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেন, তখন সেটি হাস্যকর ছাড়া অন্য কিছু নয়।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ২৭ দফায় গতানুগতিক এমন কিছু কথা বলেছে, যেসব দাবি নিয়ে তারা আন্দোলন করছে। আমাদের দেশে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলা হয়, তখন রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদের ওপর অনাস্থার কথাই চলে আসে। কারণ, রাজনীতিতে আমরা সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সৌহার্দ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সেটি তারা করতে চায় না বিধায় অগণতান্ত্রিক কিছু আনতে চায়। এটি কখনওই সমীচীন নয়।’

ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘কোনো বিরূপ মন্তব্য নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা বক্তব্য দিয়েছেন। তবে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের জেনেভা কনভেনশন মেনে বক্তব্য দেয়া প্রয়োজন। আমাদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখনকার বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের বা ১৯৭৬-৭৭ সালের কিংবা ১৯৮২-৮৩ সালের বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশ এখন ২০২২ সালের বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে এখন বাজেট প্রণয়নের জন্য প্যারিস কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে ছুটে যেতে হয় না। আমাদের বাজেট আমরাই প্রণয়ন করি, সুতরাং বিদেশিদের নাক গলানোর কোনো সুযোগ নেই।’

এর আগে মন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এবং সফটওয়্যার সংস্থা বিজেআইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘কোড সামুরাই’ ২৪ ঘণ্টার হ্যাকাথন উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে পিছিয়ে পড়লেও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে পিছিয়ে পড়েনি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বহু দেশের আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছি এবং তা বাস্তবায়িত হয়েছে। পাশাপাশি শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নয়, আমাদের সরকার দেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্র এবং সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে রূপান্তরিত করতে চায়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, ওয়ানপ্রুফ ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী ইজুমি হিরায়ামা, মারুবেনি করপোরেশন ঢাকার মহাব্যবস্থাপক হিকারি কাওয়াই, কোড সামুরাই কমিটির সদস্য ইয়াসুহিরো আকাশি এবং ঢাবির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাইফুদ্দিন মো. তারিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

প্রাথমিক পর্বের পাঁচ শতাধিক থেকে বাছাই হয়ে আসা দেড় শতাধিক প্রতিযোগী হ্যাকাথনের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিচ্ছেন।