সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৮ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

 ভোলায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, ব্যস্ত এখন জেলেরা

জেলা প্রতিনিধি  ভোলা

প্রকাশিত : ১০:৪৩ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে উৎসবের আমেজে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। আর বিভিন্ন সাইজের ইলিশে সয়লাব মৎস্য ঘাটগুলো। জেলেরা আড়তে ইলিশ বিক্রি করে আবারও ছুটছেন নদীতে। যেন দম ফেলারও সুযোগ নেই। তবে ঘাটগুলোতে ইলিশে ভরপুর থাকলেও কমছে না দাম। এতে কিছুটা হতাশ ক্রেতারা।

আড়তদাররা বলছেন, দীর্ঘদিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ার কারণে অনেক লোকসান গুনতে হয়েছিল আড়তদার ও জেলেদের। এ কারণে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেলেও দাম একটু বেশি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোলার সদরের ইলিশা, রাজাপুর, ধনিয়া তুলাতুলি, নাছির মাঝি, শিবপুরের ভোলার খাল, কাচিয়ার কাঠির মাথা এলাকার মেঘনা নদীতে জেলেরা আনন্দ নিয়ে দলবেঁধে মাছ শিকার করছেন। মাছ ধরা ঘাটে বিক্রি করা এ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা।

ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার জেলে মো. শরীফ মাঝি বলেন, দীর্ঘদিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত মাছ পাইনি। এ মাসের ৭ তারিখ আমাবস্যার সময় থেকে নদীতে আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেতে শুরু করেছি। মাঝখানে দুদিন একটু কম মাছ পাই। কিন্তু বুধবার ভোর থেকে আবারও নদীতে আগের চেয়ে অনেক বেশি মাছ পেতে শুরু করছি।

তিনি আরও বলেন, নদীতে মাছ বেশি পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি। এখন আমরা আগের মতো কোথায়ও বসে সময় নষ্ট করছি না। দল বেঁধে নদীতে মাছ শিকার করছি।

ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকার মেঘনা নদীর জেলে মো. শফিউল্লাহ মাঝি বলেন, বুধবার ভোরের দিকে আমরা ছয় জেলে নদীতে মাছ শিকার করতে গেছি। ভোরে এবং দুপুরে আমরা তুলাতুলি মৎস্য ঘাটে ইলিশ বিক্রি করে ২৪ হাজার টাকা পাইছি।

তিনি আরও বলেন, এখনো আবারও নদীতে যাচ্ছি। বিকেল ও রাতের আশাকরি আরও বেশি ইলিশ ধরতে পারবো।
মো. সেলিম মাঝি জানান, দীর্ঘদিন নদীতে মাছ না পাওয়ায় ঋণ, মহাজন ও মুদি দোকানের অনেক ধার-দেনা ছিল। এখন নদীতে ভরপুর ইলিশ পাচ্ছি। আড়তে ইলিশের দামও বেশি পাচ্ছি। তাই আগের ধার-দেনা পরিশোধ করতে শুরু করেছি। আশাকরি সব দেনা পরিশোধ করতে পারবো।

খুচরা সাধারণ ক্রেতা রিপন পাল বলেন, বাড়িতে খাওয়ার জন্য ইলিশ কিনতে তুলাতুলি মৎস্য ঘাটে এসেছি। কিন্তু ইলিশের দাম অনেক বেশি। এরপরও আটটি ইলিশ কিনেছি।

ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. ইউনুছ বলেন, প্রথমে কাঙ্ক্ষিত মাছ পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে আমরা আড়তদার ও জেলেরা অনেক সমস্যায় ছিলাম। দীর্ঘদিন পর এখন ভালো ইলিশ পাচ্ছেন জেলেরা। পাইকারি ও খুচরা বাজারে ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দামও একটু বেশি। ১ কেজি ওজনের চারটি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। দেড় কেজি বা তারও বেশি চারটি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। আর ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির কম ওজনের চারটি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। তবে কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেরা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছেন। এখন পূর্ণিমার জো চলছে তাই আগের চেয়ে ইলিশের পরিমাণ আরও বেড়েছে। এখন থেকে প্রতিদিনই নদীতে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।