প্রেমের বিয়ে: যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা-স্বামীর মৃত্যুদন্ড
মোঃ নাঈম শাহ্, নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:১১ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
নীলফামারীতে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করায় স্বামীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোঃ মাহাবুবুর রহমান নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০১ এর ১১(ক) ধারায় মৃত্যুদন্ডের রায় প্রদান করেন। মৃত্যদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোঃ আলমগীর হোসেন (২৪) জেলার ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ সোনাখুলী গ্রামের মোঃ সিরাজুল ইসলামের ছেলে। একই উপজেলার উত্তর সোনাখুলী গ্রামের খতিবর রহমানের মেয়ে সুমি আক্তার কে তার স্বামী আলমগীর হোসেন যৌতুকের অবশিষ্ট পঞ্চাশ হাজার টাকার জন্যে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় সুমির বাবা খতিবর রহমান ডিমলা থানায় জামাতা আলমগীর হোসেন, বাবা সিরাজুল ইসলাম, মা আনোয়ারা বেগম, বোন শিল্পি বেগম, চাচা ওবায়দুর রহমান, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ফুফু রওশন আরা বেগমকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০এপ্রিল ছয়জনকে অব্যাহতি দিয়ে জামাতা আলমগীরকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)।
নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বামী মোঃ আলমগীর হোসেন ও স্ত্রী সুমি আক্তার প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে গোপনে বিয়ে করে। বিয়ে সম্পর্কে দুই পরিবার জানার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর সংসার চলাকালীন সময় স্বামী আলমগীর ও তার পরিবার যৌতুকের জন্য ১লাখ ৫০হাজার টাকা দাবি করে সুমির কাছে। সুমি তার বাবা-মাকে জানালে তার পরিবার অনেক কষ্টে যৌতুকের এক লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর বাকী ৫০হাজার টাকার জন্য স্বামী আলমগীর ও তার পরিবার সুমির উপর অমানবিক নির্যাতন চালাতে থাকে। নির্যাতনের কথা সুমি তার বাবা-মাকে জানালে স্বামী আলমগীর ও তার পরিবার কে সুমির উপর নির্যাতন না করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করে তার বাবা-মা। যৌতুকের অবশিষ্ট ৫০হাজার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় নির্যাতনের এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর স্বামী আলমগীর রাতে শোয়ার খাটের কাঠ ভেঙ্গে স্ত্রী সুমির মাথায় আঘাত করলে সুমি মৃত্যুবরণ করে।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে এ্যাডভোকেট রামেন্দ্রনাথ বর্ধন বাপ্পী দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, আসামীর উপস্থিতিতে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. মাহবুবুর রহমান এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন। ডিমলা থানার মামলা নম্বর ০৮ তারিখ-০৭/১১/১৬। মামলার রায়ে আসামীর সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে।