পরিমনির মুক্তি ও মানবাধিকার
সি.কে সরকার
প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার
অবশেষে চিত্র নায়িকা পরিমনির মুক্তি মিললো মাদক মামলায় জামিনের পর। তবে তার মুক্তির পথটা অত সহজ ছিল না। দেশের উচ্চ আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে মুক্তির বিষয়ে। পরিমনির গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সবকিছুই এত দ্রুত এবং পরিকল্পিত হয়েছে যে ঘটনার পূর্বাপর দেখলেই তা সহজেই অনুমেয়। পৃথিবীর সব সমাজেই অপরাধ সংঘটিত হয়। অপরাধের বিচারের জন্য আইনও আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগের সঙ্গে যদি শক্তির প্রয়োগ হয় তাহলে অবশ্যই সচেতন মানুষ মাত্রই রাষ্ট্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের অনেক প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী বলেছেন পরীমনিকে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হতে হয়েছে। অর্থাৎ পরিমনির অপরাধী প্রমাণিত হওয়ার আগেই দেশের মিডিয়া তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে যা প্রকৃতপক্ষে মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন। তবে দেশের নাগরিকদের শেষ ভরসাস্থল উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত একটি বিশেষ ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন। সংবিধান ও মানবাধিকারের রক্ষক উচ্চ আদালত। যেকোনো ক্রান্তিকালে কিংবা কোনো নাগরিক যদি প্রতিহিংসার শিকার কিংবা কোনভাবে যদি তার নাগরিক অধিকার খর্ব হয়েছে এমন বিষয়ে আদালতের নজরে নিয়ে আসেন তাহলে আদালতের হস্তক্ষেপে তিনি তার অধিকার ফিরে পেতে পারেন। সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও কতিপয় ব্যক্তি বা সংগঠনের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। অনেক সময় সচেতন নাগরিকদের বিস্মিত করে তাদের যেন পড়া কিছুই থাকেনা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি বড়জোর নিন্দা জানাতে পারেন তবুও সেখানে অনেক সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় কারণ মাথার উপর রয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়গ। মাঝেমধ্যে বলতে গেলে তেমন কোনো কারণ ছাড়াই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে অনেকেই কারারুদ্ধ করা হয়েছে। তবে আশার কথা শুভবুদ্ধি সম্পন্ন সুশীলসমাজ এসবের বিরুদ্ধে বলার চেষ্টা করেন সব সময়। কখনও আমলে নেয় কখনো নেয় না। তবুও আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষায় আদালতকেই এগিয়ে আসতে হয় যেটা সাম্প্রতিক প্রমাণ পরিমনির মুক্তি।