মাগুরায় মানবতার দৃষ্টি স্থাপন করলেন ইউএনও ইয়াসিন কবির
মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:০৯ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার
মাগুরায় মঙ্গলবার ফেসবুকে ভিক্ষুক হাসি বেগমের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। আগষ্ট ২৪ তারিখে সেখানে তিনি তার ছেলে ঝন্টু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তিনি ৩ দিন ভাত খান না, তার ঔষধ কেনার জন্য কোন টাকা পয়সা দেয় না, তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, তার বউমা তাকে বাড়িতে ফিড়লে ঝাটা পেটা করবে বলে বাড়ির দড়জা তালাবদ্ধ করেছে, তাকে গোয়াল ঘরে থাকতে দেয়,এমনি তাকে মারধর করা হয় তাছাড়া তার ভাতার টাকাও তারা নিয়ে নেয়।
এমনবস্থায় তিনি মাগুরা পৌরসভার নান্দুয়ালী ৭ নম্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারন্দায় আশ্রয় নেন।
তিনি বলেন রাতে ঘুম আসেনা মশার কামড়ে, আরো পুরুষ লোকেরা আশেপাশে ঘুমাই।
এসব কথা তার ছেলে জানা ও বুঝার পরেও তার কোন খোঁজ খবর নেয় না।
তাছাড়া তার নাতি পুতির জন্য তার দরদ হয় এসব কারণে সে দুবেলা দুমুঠো ভাত,ঔষধ ও আমৃত্যু পর্যন্ত একটু শান্তিতে থাকতে চান তার ছেলের বাড়িতে।
মঙ্গলবার ফেসবুকে ভিক্ষুক হাসি বেগমের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মাগুরা সদর উপজেলার মানবিক অফিসার ইউএনও ইয়াসিন কবির মহোদয়ের বিষয়টি নজরে আসে।
পরদিন বুধবার ২৫ আগষ্ট সকাল ১১ টার সময় তার ছেলে ঝন্টু শেখকে জিজ্ঞাবাদের জন্য উপজেলা পরিষদের ডাকা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাটি তদন্তের জন্য পৌরসভার নান্দুয়ালী ৭ নম্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান এবং হাসি বেগমকে দেখতে পান।
হাসি বেগমের স্কুলের বরান্দায় থাকা ও তার অভিযোগের সত্যতা পায় ইউএনও। এসময় হাসি বেগমের ছেলে ঝন্টু ও তার স্ত্রী উপস্থতি ছিলেন। তাছাড়া পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা জনপ্রতিনিধি মনিরা বেগম শাবান সহ এলাকার স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। কাউন্সিলর শাবানা বলেন ঘটনাটি সম্পর্কে হাসি বেগম তাকে জানিয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে তিনি তদন্তও করেছেন। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি।
পরে উপজেলাপ নির্বাহী কর্মকর্তা মানবিক দিক থেকে হাসি বেগমের ছেলে ও তার স্ত্রী ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে ঐ মাকে তাদের সাথে বাড়িতে পাঠান ও হাসি বেগমকে ভিক্ষা করতে নিষেধ করেন।
পরে হাসি বেগমকে দুই বস্তা সরকারী ত্রাণ দিয়ে তাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
উল্লেখ যে মাগুরা সদর উপজেলার ইউএনও ইয়াসিন কবির তার আগের কর্মস্থল শ্রীপুর উপজেলাতেও এরকম অনেক মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত আছে বলে জানান শ্রীপুরের সাংবাদিক আলোকিত জুয়েল।