খুচরা বাজারে কমেনি চালের দাম
তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট
প্রকাশিত : ০৪:৪৪ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার

ক্ষেত থেকে এখনও আমনের ঘ্রাণ না শুকালেও বাজারে চড়া চালের দাম। স্থান ভেদে কেজিতে মোটা চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে হিমশিম খাচ্ছে আমজনতা।
গত অক্টোবরে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন, আমন ধান কাটার পর ৫ থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ডিসেম্বরে দেশে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেসরকারি খাতে আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয় কয়েকটি শর্ত দিয়ে বেসরকারিভাবে ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪ লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয়।
কারওয়ান বাজারের এক চাল ব্যবসায়ী জানান, চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর খবরে অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা দামের রশিতে লাগাম পড়ে। ইতিমধ্যে ভারত থেকে চাল আসা শুরু হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারির প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়তে আরও কিছু দিন সময় লাগতে পারে।
রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকার কাশেম জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী জানান, চাল আমদানির ফলে দাম কমানোর কথা এলেও আমরা এখনই কম দামে বিক্রি করতে পারছি না। কারণ এগুলো আমাদের আগের কেনা। তাছাড়া খুচরা ২ কেজি বা ৫ কেজি করে বিক্রি করলে আমাদের বহন খরচ ও ব্যাগের দাম উঠে আসে না। তাই মোটা চালটা আমরা ৫২ টাকার কমে বিক্রি করতে পারছি না। তবে কেউ যদি পুরো বস্তা কিনে তাহলে সর্বনিম্ন ৪৮ টাকায় বিক্রি করলেও খরচ উঠে যায়। মিনিকেট আমাদের ৫৬ টাকায় কেনা। কেজি প্রতি মানভেদে বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে আগের দামে ফিরে আসতে কমপক্ষে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা ব্যবসায়ী আল-আমিন জানান, মোটা চাল বিক্রি করি ৫২ টাকায়। মিনিকেট চাল মানভেদে ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি করছি। নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। চাল আমদানির কারণে মোকামে চালের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনও তেমনভাবে কমেনি। কেজি প্রতি ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা কমেছে। আগে যে বস্তা বিক্রি হতো ২৬শ টাকায় এখন সেই বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৯শ টাকায়। তাই চাইলেও আমরা কম দামে এখনই বিক্রি করতে পারছি না।
অন্যদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে মোটা চাল কেজিতে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় এবং চিকন চাল ৬০ থেকে ৬৬ টাকায় বিক্রি হয়ে এখন ৫৬ থেকে ৬৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সবগুলো সরকারি গুদামে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৭ দশমিক ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। এর মধ্যে চাল ৫ দশমিক ৩৩ লাখ টন এবং গম ১ দশমিক ৮৭ লাখ টন। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় চালের মজুদের এই পরিমাণ প্রায় অর্ধেক।
প্রসঙ্গত, সরকার চালের ঘাটতি মেটাতে আমদানি শুল্ক কমায় ৭ জানুয়ারি এবং ভারত থেকে হিলি বন্দর দিয়ে চাল আসা শুরু হয় ১০ জানুয়ারি। যার প্রভাব পড়ে চালের পাইকারি বাজারে। গত মাস থেকে চালের দাম ক্রমান্বয়ে অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা চালের দাম চলতি সপ্তাহে আর বাড়েনি। সামান্য হলেও কমেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শীঘ্রই খুচরা বাজারে কমবে চালের দাম।