শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পৃথিবীর কয়েকটি আজব স্থান

প্রকাশিত : ১১:৪৭ এএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার

পৃথিবীটা আসলেই অদ্ভুত। এখানে রহস্যের সীমা নেই। পৃথিবীতে এমন কিছু স্থান বা বিষয় রয়েছে, যা আশ্চর্য হওয়ার মতো। আজব সব ঘটনার কারণে যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে হাজারো রহস্যে ঘেরা এ পৃথিবী। গবেষকরাও এ রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেননি। তাই অতিপ্রাকৃতিক স্থান বলে অভিহিত করেছেন তারা। এমন কয়েকটি স্থান সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন:

রক্তের জলপ্রপাত

একদল গবেষক অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে গিয়ে রক্তের জলপ্রপাত দেখতে পান। তারা ধারণা করেন, কোনো অণুজীবের ফলে এমনটা ঘটছে। যদিও শূন্যের অনেক নিচে হিম-শীতল আবহাওয়ায় টিকে থাকা অসম্ভব। তবে অনেকে মনে করেন, এখানকার মাটিতে থাকা আয়রন ও সালফারের কারণে পানির রঙ লাল বর্ণ ধারণ করেছে। তবে এ পানি কেন জমে লাল রঙের আইসক্রিমের মতো হলো না, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তারা। আজও গবেষকরা এর কোনো উত্তর খুঁজে পাননি।

চুম্বক পাহাড়

নিউ ব্রান্সউইকে অবস্থিত ম্যাগনেট বা চুম্বক পাহাড়। পাহাড়ের মতো উঁচু স্থান থেকে একটি বল বা গাড়ি যা-ই ছেড়ে দেওয়া হোক, তা নিচের দিকে নেমে যাওয়ার কথা। উল্টোটি ঘটলে আশ্চর্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। প্রথমে যে প্রশ্নটি মাথায় জাগে, তা হলো-পাহাড়ে মনে হয় চুম্বক আছে। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত এর আকর্ষণ বেশ জোরালো ছিল, রহস্যময় কারণে তা কমে যায় এরপর। জনশ্রুতি রয়েছে, ঘোড়ার গাড়িও ওপরের দিকে টেনে নিত এ পাহাড়। এ পাহাড়টি এখন একটি জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পটে পরিণত হয়েছে।

অরচার্ড পার্ক

আগুন নেভানোর সবচেয়ে সহজ উপকরণ পানি হলেও পানির পাশে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির অরচার্ড পার্কে রয়েছে সুন্দর একটি জলপ্রপাত। এ জলপ্রপাতের নিচেই দেখা মিলবে অসীম আগুনের খেলা। এখানে সব সময়

আগুন জ্বলে। কোনো একসময় হঠাৎ নিভে গেলেও আবার নিজে থেকেই জ্বলে ওঠে।

মাউন্ট রোরাইমা

মাউন্ট রোরাইমা একটি পর্বতমালা। এর স্থানীয় নাম টিপুই। বেশ দুর্গম ও মেঘে ঢাকা-ভেজা রহস্যময় টিপুই। এ স্থানটি শুকনো মৌসুমেও মেঘে ঢাকা থাকে। এটি প্রথম আলোচনায় আসে ১৫৯৬ সালে। ৩১ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এর অবস্থান। রহস্যময় এ পর্বতমালার অবস্থান তিন দেশের সীমান্তে-ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল ও গায়ানার সীমান্তবর্তী স্থানে। তবে শুধু ভেনেজুয়েলা সীমান্ত দিয়ে এ দুর্গম পর্বতে প্রবেশ করা যায়। অপূর্ব সুন্দর পর্বতটি সব সময় মেঘে ঢাকা থাকে। মনে হয়, এ যেন এক স্বর্গরাজ্য।

ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি

অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত এ ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি। জনমানবহীন উপত্যকাটি বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমির একটি। অ্যান্টার্কটিকার বরফ ও তুষারের মধ্যে এর অবস্থান হলেও প্রতিবছর এখানে মাত্র চার ইঞ্চি বৃষ্টি হয়। স্থানটি মেরু অঞ্চলের বরফে ঢাকা থাকার কথা থাকলেও এটি সম্পূর্ণ বরফশূন্য ও খালি। এখানে কিছু শৈবাল দেখা গেলেও কোনো গাছপালা নেই। গবেষকদের মতে, এ স্থানটির সঙ্গে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশের মিল রয়েছে।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল শয়তানের ত্রিভুজ নামেও পরিচিত। আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চল এটি। এখানে সমুদ্রগামী বেশ কয়েকটি জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার কথা শোনা যায়। অনেকে মনে করেন, ওইসব অন্তর্ধানের কারণ নিছক দুর্ঘটনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতায় নিখোঁজ হতে পারে। অনেকে মনে করেন, এসবের পেছনে অতিপ্রাকৃতিক কোনো শক্তি দায়ী।

মগুইচেং

চীনের ঝিনজিয়াং অঞ্চলের একটি মরুভূমি মগুইচেং। এর আক্ষরিক অর্থ ‘শয়তানের নগরী’। স্থানটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ও জনশূন্য। অনেক অদ্ভুত ঘটনা এখানে ঘটে বলে আশেপাশের লোকজন বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। দর্শনার্থীরা এ স্থানে রহস্যময় আওয়াজ, বিষন্ন সুর, গিটারের মৃদু ধ্বনি, শিশুদের কান্না ও বাঘের গর্জন শুনতে পান। এসব শব্দের কোনো উৎসের সন্ধান গবেষকরা আজও খুঁজে পাননি।