বৃহস্পতিবার   ৩১ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ১৬ ১৪৩১   ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৯৫

আতঙ্কে উপকারভোগীরা

স্বপ্নের ঘরে ফাটল : দেয়া হচ্ছে জোড়াতালি

এস এম খোকন

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২১  

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ৩ মাসের মধ্যেই  ফাটল দেখা দিয়েছে। এই ফাটল দেখা দেয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে উপকারভোগীদের।  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপল¶ে গৃহহীনদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের বেশ কিছু ঘরে নির্মাণের পর বসবাসের ৩ মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দেয়। এতে এসব ঘরে থাকা সুবিধাভোগী নিম্নবিত্ত মানুষগুলো আছেন আতঙ্কে। ফাটল গুলোতে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করার চেষ্টাও করা হচ্ছে। এছাড়া টাকার বিনিময়ে ঘর হস্তান্তরের অভিযোগ রয়েছে কয়েক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। স্থানীয় ও উপকারভোগীদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার সরেজমিনে সকাল ১১ ঘটিকায় বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর -পূর্ব ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে এই অবস্থা। উপকারভোগীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মাত্র ৩ থেকে ৪মাস আগে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বুঝে পান এই রবিদাস সম্প্রদায়েরর ভূমিহীনরা। পাকা ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হলেও বসবাসের কিছুদিন পরই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ও মেঝে ফাটা লক্ষ্য করা যায়। ফলে ওই ঘরে থাকা উপকারভোগীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেকটাই তড়িঘড়ি করে ঘরগুলো নির্মাণ ও মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার না করার কারণেই সামান্য দুর্যোগে ঘরের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব ফাটল ধরা ঘর বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছেন অনেক উপকারভোগী। অন্যদিকে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হচ্ছে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। আশেপাশে  গভীর নলকূপ না থাকাতে নিরাপদ পানি পান করতে পারছেন না ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন উপকারভোগীরা। প্রতিটি ঘর তৈরিতে বরাদ্দ চিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সেমিপাকা দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি করে রান্না ঘর ও টয়লেট রয়েছে। কিন্তু ছয় মাস যেতে না যেতেই ঘরগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও লুটাপাটের অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া মনু রবি দাস, সুনিল রবি দাসের সাথে কথা হলে তারা জানান, মানসম্মত উপকরণ এবং ঘরগুলো নির্মাণে তাড়াহুড়া করারা কারণেই ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা তারা। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে এসব ফাটল ধরা ঘরে থাকতে ভয় লাগছে তাদরে। ভয়ে অনেকেই ঘর ছেড়ে বাইরে থাকছেন। তারা আরো জানান, আমরা ভূমিহীন গরীব মানুষ বলেই ঘর পেয়েছিলাম। কিন্তু এমন ঘর পেলাম যে ঘরে থাকা এখন ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে আমাদেরকে ভাল মানের ঘর তৈরি করে দেওয়া হোক। আর যারা ঘর নির্মাণে অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি। এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, ঘরে ফাটল ধরেছে এই বিষয়ে আমরা অবগত নই। আমরা এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি । তবে  অভিযোগ পেলে  তিনি দ্রুত ফাটল ধরা ঘরগুলো মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করে তোলা হবে।

এই বিভাগের আরো খবর