সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৮ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৫২

সরাইলে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণকরে প্রশংসায় ভাসছেন মালেক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৪  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এই জমির আইলের পথটি খুবই বেহাল অবস্থায় ছিলো। ফলে জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলে অনুপযোগি ছিলো। বিশেষ করে বর্ষাকালে এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ হত সবচেয়ে বেশি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার পাঁচটি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম এই কাঁটানিসার পূর্বপাড়া-গুচ্ছগ্রাম রাস্তাটি। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি এতদিন যাবৎ চলাচলের অনুপযোগি একটি গোপাট আকারে ছিল।

জানা যায়, স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘসময় ধরেও রাস্তাটি নির্মাণের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এরফলে ওই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ এলাকার সাধারণ মানুষ রাস্তাটি নির্মাণের জন্য এই এলাকার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আব্দুল মালেককে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন। গ্রামবাসীদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এ রাস্তাটি নির্মাণের কাজ শুরু করেন আব্দুল মালেক। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটি নির্মাণ করে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। আব্দুল মালেক নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাঁটানিসার গ্রামের বাসিন্দা এবং মরহুম আব্দুল শহিদ এর ছেলে।

আব্দুল মালেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক ফ্রনটিয়ার পত্রিকার সম্পাদক এবং জনপ্রিয় আইপি চ্যানেল এএমটিভি বাংলা ও এ. মালেক গ্রুপের চেয়ারম্যান।

জানা গিয়েছে, শুধু গুচ্চগ্রামেই প্রায় কয়েকশত লোকের বসবাস। যাদেরকে এই কাঁটানিসার আসতে হলে এই পথ দিয়ে জমির আইল ধরে হেঁটে হেঁটে আসতে হয়। প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে তারা জমির আইল ধরে হেঁটে হেঁটে অনেক কষ্ট করে আসা যাওয়া করে থাকেন।

এদিকে বর্ষাকালই তারা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের সম্মুখীন হোন। কারণ তখন পুরো এলাকা বর্ষার পানির নিচে তলিয়ে যায়। এরফলে এই এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের সম্মুখীন হোন।

 

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নির্মিত রাস্তাটি গড়ে ১৫-২০ ফুট চওড়া এবং কোথাও ৪-৫ ফুট বা আবার কোথাও বা ৫-১২ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন। এই এক কিলোমিটার সড়কটির নির্মাণর কাজ প্রায় দুই মাস ধরে লাগাতার চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আব্দুল মালেক তার নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। রাস্তাটি নির্মাণের পর খুব সহজেই এলাকার বাসিন্দারা মুল সড়কে উঠতে পারবেন। তারা জানান, আব্দুল মালেক সবসময় সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে তিনি অনেক মানুষকে নিরবে সহযোগিতা করেছেন। এখন গ্রামের মানুষের জন্য তিনি এই রাস্তাটি নির্মাণ করছেন। এতে এলাকার মানুষের বেশ উপকার হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাস্তাটি নির্মাণে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দলে ভাগ হয়ে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ কর্মি কাজ করছেন। তাদের প্রত্যেকের দৈনিক মজুরি ও অন্যান্য খরচ বহন করছেন এই সমাজসেবক আব্দুল মালেক।

আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, এই রাস্তা নির্মাণে এলাকাবাসী আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। কেউ কেউ স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন। গ্রামবাসী এই রাস্তা নির্মাণে আমার ডাকে সাড়া দেওয়ায় আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় এই কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, আমি সবসময়ই কাজ ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কাজে মানুষের উপকার হয়, সমাজের কল্যাণ হয়, সেই কাজেই আমি আনন্দ পাই। মুলত নিজের বিবেকের তাড়নায়, মানুষের মঙ্গলের জন্যই এই রাস্তাটি নির্মানের কাজে হাত দেই। তিনি জানান, তিনি নিজে শ্রমিকদের সাথে এক হয়ে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য মাটি কাটেন। তিনি বলেন, আমি চলে গেলেও যেনো আমার কাজগুলো আমার হয়ে অমরতা লাভ করে, সেই লক্ষ্যেই সামাজিক কাজ করার প্রেরণা পাই।

এই বিভাগের আরো খবর