মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৬ ১৪৩১   ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২২

রাজপথে ফিলিস্তিনপন্থি মিছিলের নেতৃত্ব দিলেন কিউবার প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২৪  

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

এমন অবস্থায় ক্যারিবিয়ান দেশ কিউবাতে ফিলিস্তিনপন্থি বিশাল বিক্ষোভ-মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজপথে হাজারও মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল।

এসময় তিনি ও তার সহযোগীরা ঐতিহ্যবাহী কেফিয়াহ স্কার্ফ পরেছিলেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের সাথে নিজেদের সংহতি প্রকাশ করতে এবং ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানাতে প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল এবং কমিউনিস্ট-পরিচালিত এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির অন্যান্য নেতাদের নেতৃত্বে হাজার হাজার কিউবান নাগরিক রাজধানী হাভানায় মিছিল করেছেন।

কিউবায় বসবাসরত প্রায় ২৫০ ফিলিস্তিনি মেডিকেল শিক্ষার্থীও এই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। মিছিলে বিক্ষোভকারীরা একটি বড় ব্যানার বহন করেন যাতে লেখা ছিল, “স্বাধীন ফিলিস্তিন দীর্ঘজীবী হোক”। এছাড়া মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রেসিডেন্ট মিগুয়েলসহ তার সহযোগীরা ঐতিহ্যবাহী কেফিয়াহ স্কার্ফ পরেছিলেন।

মিছিলে অংশ নেওয়া মিশেল মারিনো নামে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ২০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “আমরা এখানে ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য দাবি, তাদের সার্বভৌমত্ব, তাদের স্বাধীনতা … এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েল যে গণহত্যামূলক ক্রুসেড চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।”

কিউবাতে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি ছাত্র মোহাম্মদ সুওয়ান জনতার উদ্দেশে বলেন, গাজা এবং পশ্চিম তীরে “বিশ্ব পঙ্গু হয়ে গেছে এবং তারা এই ট্র্যাজেডি বন্ধ করতে ব্যর্থ”।

আল জাজিরা বলছে, ফিলিস্তিনপন্থি এই বিক্ষোভ মিছিলটি গত ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের বার্ষিকীতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হ্যারিকেন মিল্টনের কারণে সেসময় মিছিলটি স্থগিত করা হয়েছিল। মহাশক্তিশালী এই সামুদ্রিক ঝড়টি গত সপ্তাহে কিউবা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত হানে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার ৩০০ জন লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৯৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর