মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪২৪

মোঃ আঃ কুদদূস: আগামী দিনের কবি 

রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৪  

কবি ও গীতিকার মোঃ আঃ কুদদূস। এই সময়ে বাংলা সাহিত্যের একজন সময়োপযোগি আলোচিত কবি। কবিতার গতর নির্মানে তিনি একজন বোদ্ধা-পরিব্রাজক। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। এক কথায় কবিতার সাথেই তাঁর নিত্য বসবাস। সমসাময়িক দক্ষ চিন্তক, মেদবহুল প্রজ্ঞাবান এবং সাদা মনের অহিংস এক মানুষ তিনি।


এ প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পড়ছে, কবি হ্যোল্ডারলিন (খ্রিষ্টাব্দ ১৭৭০-১৮৪৩) তাঁর 'রুটি আর মদ' কবিতায় প্রশ্ন রেখেছেন, এবং বিপন্ন সময়ে কবি কিসের জন্য?" এই প্রশ্নকে ভাবনায় রেখে জার্মান দার্শনিক হাইডেগার "কিসের জন্য কবি" প্রবন্ধে হ্যোল্ডারলিনকে 'বিপন্ন সময়ের' কবিদের অগ্রদূত হিসেবে মান্য করেছেন । কিন্তু কী সেই বিপন্ন সময় ? হাইডেগারের চিন্তায় হেরাক্লিস, দিওনিসিস, এবং ক্রাইষ্ট এই ত্রয়ীর পৃথিবী থেকে অন্তর্ধানের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বুকে রাত নেমে এসেছে, এবং সেই রাত ক্রমাগত অন্ধকার বিস্তার করে মধ্যরাত্রির দিকে এগিয়ে চলছে, এবং এটি-এমনই এক বিপন্ন সময় যে আমরা সেই বিপন্ন সময়কে অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছি এবং তাকে প্রশ্ন করতেও ভুলে গেছি। 

এখানে একটা বিষয় আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, আড্ডা সাহিত্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। কফি হাউজের সেই আড্ডার কথা, বিউটি বোর্ডিং থেকে যে সৃষ্টি পেয়েছে বাংলা সাহিত্য, সেখানে অধ্যাপক একেএম হারুনুর রশিদ, প্রফেসর মোহাম্মদ আশরাফ এই দুইয়ের প্রয়াণের পর, আমরা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাহিত্য একাডেমি সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন এবং আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন কেন্দ্রীক কবি আব্দুল মান্নান সরকারকে পাই। তাঁদের স্নেহের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হঠাৎই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি টর্চ হাতে এগিয়ে এলেন অহিংস এক তৃতীয় নয়নের কবি, যিনি মানুষ বলতে শুধুই মানুষ বুঝেন- তিনি কবিতা বিষয়ক গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সুযোগ্য প্রধান নির্বার্হী কর্মকর্তা বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মোঃ আঃ কুদদূস।

 
যে সময়টাতে এই সংস্কৃতির রাজধানীতে একজন পূর্ণাঙ্গ কবিতাবিজ্ঞানীর দরকার ছিলো, ঠিক তখনই তিনি এলন। এবং এসেই তিনি সকলের হৃদয় জয় করলেন। তাঁর মনন ও মগজের সিঁড়ি বেয়ে যে মঙ্গল সাহিত্য আড্ডা শুরু হয়েছিলো, আজ সেটা মঙ্গল সাহিত্য উৎসবে রূপ নিয়েছে। অনেক দল উপদল আজ একই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারছে। এই কৃতিত্ব শুধুই তাঁর জন্য। 

 আমার মতে তিনি একজন বিজ্ঞানী। একজন মনোচিকিৎসক। একজন সর্বধর্ম প্রেমিক পুরুষ। একন হোলম্যান। এক অখণ্ড জীবন্ত জ্ঞানকোষ। তাঁর কবিতা প্রকৃতি এবং মানুষের ঐক্য খুঁজে ফিরেছে। চিন্তা চেতনায় তাঁর কবিতা ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত নয়, বরং তিনিই ভবিষ্যৎ হতে জেগে ওঠেন বারবার। আমাদেরকে নতুন নতুন পথ দেখান-অন্ধকারে টর্চ হাতে। তিনি প্রচলিত ধারার ভেতর থেকেই নতুন ধারা, ইজম তৈরির এক অনবদ্য কারিগর। পথের ভেতর হাঁটতে হাঁটতেই তিনি তৈরি করেন নতুন পথ। জীবনের গভীরে ডুবি দিয়ে তিনি খুঁজে বের করেন জীবনের অন্যরকম মানে। প্রেম- দ্রোহ  প্রকৃতি ও নারী প্রেম, জীবন ও জীবিকা নিয়ে গভীর দার্শনিক উপলদ্ধি, ইত্যাদি তাঁকে নিয়ে গেছে 'বিপন্ন সময়ের' কবিদের অগ্রদূতদের তালিকায়!

জ্ঞানে কর্মে প্রজ্ঞায় কীভাবে মানুষ তার নিজেকে অতিক্রম করতে পারেন, সেই মন্ত্র জানেন কবি মোঃ আঃ কুদদূস। (চলবে...)

এই বিভাগের আরো খবর