শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১২১৩

জিয়া পরিষদের সদস্য থেকে রুপালী ব্যাংকের এমডি মো: জাহাঙ্গীর!

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২৩  

২০০৩ সালে তিনি ছিলেন জিয়া পরিষদ রূপালী ব্যাংক ইউনিটের সদস্য, বর্তমানে হয়ে গেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এমনকি রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকটিকে নোয়াখালী সমিতিতে পরিণত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছিল রূপালী ব্যাংকের এমডি এবং সিইও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের কথা। 


তরুণ কন্ঠের  হাতে আসা নথিতে দেখা গেছে, ২০০৩ সালের ২২ জুন রূপালী ব্যাংক জিয়া পরিষদ ইউনিটের কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে ৫২ নাম্বর সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছিল বর্তমান এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। উল্লেখ্য, জিয়া পরিষদ রূপালী ব্যাংকের শাখার ২০০৩ সালের ২০ মে তারিখে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কবির মুরাদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার সমন্বয়ক হাসানুল কবির এবং এনামুর রহমান সিদ্দকী। ওই সভা থেকেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে কমিটি গঠন করা হয়েছিল।  বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি, বর্তমানে ব্যাংকটিতে গোপনে বিএনপিপন্থী অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

ব্যাংকটির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৯ জানুয়ারি ১৯৮৫ সালে রূপালী ব্যাংকে সহকারী অফিসার হিসাবে যোগদান করেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। ব্যাংকটির আইসিটি বিভাগে তিনি কর্মরত ছিলেন ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর তিনি নানা প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগ সরকারের কয়েকজন নেতার আর্শিবাদে সরকার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজ এলাকা নোয়াখালী অঞ্চল থেকে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির সরাসরি আর্শিবাদ পেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব বুঝে নেন ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলেন। তার মাধ্যমেই রূপালী ব্যাংকের সাবেক দুই ডিএমডি খান ইকবাল ও গোলাম মর্তুজাকে অন্য ব্যাংকে বদলি করানোর কথা বলেছে সূত্রটি। তবে, আরেক ডিএমডি তাহমিনার বাড়ি নোয়াখালী হওয়াতে তাকে বদলি করা হয়নি।  
জিয়া পরিষদের সদস্য থেকে রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. জাহাঙ্গীর! এদিকে, অন্যান্য রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের এমডিদের ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাংকিং, ট্রেজারি ব্যাংকিং, ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যাংকিং থেকে শুরু করে ব্যাংকের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশদ অভিজ্ঞতা থাকলেও রূপালী ব্যাংকের বর্তমান এমডি এবং সিইও’র ক্ষেত্রে সেগুলো মানা হয়নি। তিনি অনেকটা লবিং করেই গুরুত্বর্পূণ এই চেয়ারে বসেছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে নিজ এলাকার (নোয়াখালী) লোকজনকে দায়িত্ব দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, কোম্পানি সচিব জি এম শাহেদুর রহমান, মানবসম্পদ বিভাগের মহা ব্যবস্থাপক হারুনর রশীদ, মতিঝিল কর্পোরেট শাখার ডিজিএম শাহজাহান এবং পিএস টু এমডি ডিজিএম মনজুর হোসেন। 

উল্লেখ্য, গণমাধ্যমে বর্তমান রূপালী ব্যাংকের এমডি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ১৯৯০ সালে যোগদান করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়, সেটি মিথ্যা দাবি করেছে সূত্রটি। এমনকি নিশ্চিত করেছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের শিক্ষাজীবনে দুইটা তৃতীয় শ্রেণী এবং দুইটা দ্বিতীয় শ্রেণীর ডিগ্রি রয়েছে। 

এসব বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে একধিকবার ফোন করলেও ফোন ধরেননি। অভিযোগের বিষয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর দেন নি।
 

এই বিভাগের আরো খবর