রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪০৯

কোন পথে আফগানিস্থান - সিকে সরকার

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

কথিত আছে আফগানরা কারো কাছে বশ্যতা স্বীকার করেনা । তারা যুদ্ধবাজ। শতশত বছরের ইতিহাস সে কথাই বলে। যুগে যুগে বহু বাইরের শক্তি আফগানিস্থানকে দখল করেছে কিন্তু বাস্তবে আফগানদের বশ্যতা স্বীকার করাতে পারেনি। যেমন গত শতকের সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭৯ সাল কিংবা এই শতকের ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগান দখল। অবশেষে সকলেরই আফগান ত্যাগ সেই সত্যটাই আবার ফুটে ওঠে।
গতকাল তালেবানরা একটা অর্ন্তবর্তী সরকার গঠন করেছে তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন হাক্কানী নেটওয়ার্কেও প্রধান যিনি কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ানটেড ব্যক্তি। সরকার গঠন নিয়ে নাটক কম হয়নি জল ঘোলাও কম হয়নি। এখনও ভিতরে বাহিরে কত নাটকের মহড়া যে চলছে তা কেউ জানেনা। তবে কাতারের দোহায় যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া-চীন তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। আর পাকিস্থানতো তালেবানের দোসর। গতকাল রাজধানী কাবুলে শতশত আফগান নারী পাকিস্থান বিরোধী মিছিল করেছে। তারা পাকিস্থান নিপাত যাক শ্লোগান দিয়েছে। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে শতশত নারী রাস্তায় নেমে আসেন। তারা নারী অধিকারের পক্ষে শ্লোগান দেয়। শিক্ষা চাকুরীসহ অনেক অধিকারের জন্য লড়াই করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করা হয় ঐ মিছিলে।
তালেবান নেতৃত্ব ধীরে চলো নীতি এবং সকলকে নিয়ে পথ চলার কথা বললেও ইতোমধ্যে কয়েকজন নারীকে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টি তাদের নেতিবাচক রাজনৈতিক দর্শনেরই ফসল। তারা আসলে সভ্য দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাদের অতীত কর্মকান্ড কিংবা তাদের দর্শন সবকিছু আসলে ঐ নেতিবাচক ধারনারই ইঙ্গিত বহন করে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সকল মত পথ ও বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে নতুন আফগানিস্থান বিনির্মাণ সত্যি বড় দুরুহ কাজ বড় চ্যালেঞ্জ যদিও তা বাস্তবে অসম্ভব বলে মনে হয় অধিকাংশেরই। অনেক সমর নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ধারণা আমেরিকা আফগানিস্থানের জনগণকে বারুদের ডিপোর ওপওে রেখে গেছেন। বিশেষ করে তালেবানদের টার্গেট আধুনিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠী,নারী সমাজ তাদেরকে বন্দীদশায় রাখতে তাদের বেশ স্বাচ্ছন্দ। তাদের বন্দীদশায় রাখা তালেবানদের পক্ষে কতদিন সম্ভব তা সময়ই বলে দেবে। তবে আসল সত্যটা হচ্ছে মানুষকে যেমন দীর্ঘদিন কোন কিছুর মধ্যে বন্দী করে রাখা যায়না কিংবা কোনো মতকে চাপিয়ে দিয়ে মানতে বাধ্য করানো যায়না সেটিই হচ্ছে বাস্তবতা। যদিও প্রবল ভারত বিরোধী তালেবান ইতোমধ্যে ভারতের কুটনীতিকদের সাথে কাবুলে বৈঠক করে নমনীয় ভাব প্রদর্শন করেছে কারন গোটা আফগানিস্থান জুড়ে বহু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছিল ভারত। ভারত যদি চলে আসে তাহলে ঐ মেঘা প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়বে এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্থ হবে। সবকিছু ভেবে ভারতকে ছাড় দেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে তালেবান নেতৃত্ব।
এদিকে পানশির এলাকা ছেড়ে গেছে আহমেদ মাসুদের বাহিনী । তাছাড়া আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত আফগান সেনারও চলে গেছে তালেবানদের কোনো প্রতিরোধ ছাড়া। এরা ভবিষ্যতে তালেবানদেও বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে এটা চরম বাস্তবতা। সুতরাং সর্বদা বিবেচনা করে একথা বলাই যায় আফগানিস্থান এখন একটা বারুদের ডিপোর ওপরে---শান্তি সূদুর পরাহত।
 

এই বিভাগের আরো খবর