বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১২৩

ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২২  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। কারণ, তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেটাই বোঝা যাচ্ছে।’

শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

গণসমাবেশে সরকারের বাধা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, নানারকম প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে গতকাল থেকেই রংপুর জনসমাবেশে জনতার ঢল নামে। মানুষের যেন স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবে পরিণত হয়েছে রংপুর মহানগর। বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে মানুষ রংপুরে এসে মিলিত হয়েছে। মানুষ শুকনা খাবার রুটি চিড়া নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছে। এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।

তিনি বলেন, জনতার এ স্রোত দেখে বিচলিত বোধ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রিসভার কিছু সিনিয়র সদস্য। এতে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিরোধী কথাই বলছে না বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন।

‘গত দুদিন আগে নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা যে বক্তব্য দেই সরকারের গুম খুন নির্যাতনের বিরুদ্ধে শুধু যে আমরাই দেই তা নয় বিরোধী দলগুলো এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে অভিযোগ করেছে সমালোচনা করেছে। সেই সমালোচনাগুলোই পক্ষান্তরেই ওবায়দুল কাদের বলেছেন। তাতে আমার মনে হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। শতকরা ৯০ ভাগ বলছে আর দশভাগ বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলছে; যেভাবে বলুক না কেনো মনে হয়েছে তিনি বিরোধী দলের কথাগুলোই বলছেন।’

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, গত ১৪ বছরে ফ্যাসিবাদি কায়দায় গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদের চিরচেনা সংস্কৃতি সেটা হলো সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডকে বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল তৈরি করা। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় তারা (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশে নব্য বাকশাল তৈরি করেছে। এখানে কথা বলা পাবলিক প্লেসে হোক আর রুমের ভেতরে তার পরিণতি হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া অথবা জেলে যাওয়া।

তিনি বলেন, তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে অচেনা একটা শব্দ গুম সেটা প্রচলন করেছে। মানুষের মধ্যে এখন আতঙ্কের নাম ভয়ের নাম হচ্ছে গুম। মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকে যে তার সন্তান হারিয়ে যাবে গুম হয়ে যাবে।

রিজভী বলেন, দেশে যখনই স্বচ্ছ নির্বাচন হবে এবং যারা ক্ষমতায় আসবে তারা এসব অন্যায়ের বিচার করবে আর সেই ভয়ে শেখ হাসিনা এখন পাঁয়তারা করছে নানান অভিযোগ দায়ের করছে। তিনি এবং তার সরকার জনগণের আদালতে অপরাধী হয়ে আছে এটা এখনো তার মাথায় ঢোকেনি।

তিনি বলেন, বিএনপি যে সভা সমাবেশগুলো করছে সেখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ এবং বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে মানুষের সমর্থন আছে মানুষ বিএনপির পক্ষে আছে। আমাদের দাবি হচ্ছে গণতন্ত্রের ‘মা’ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া। এই সরকার তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়েছে, দৃষ্টান্তহীনভাবে দাম বাড়িয়েছে এর প্রতিবাদে বিএনপির এই কর্মসূচি চলছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকের সমাবেশে লোকে লোকারণ্য। শুধু সমাবেশস্থলে নয়, সারা রংপুর শহরে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়েছে। এটার মধ্য দিয়ে দুইটা জিনিস সুস্পষ্ট হচ্ছে। বিএনপি জনগণের জন্য যে কর্মসূচি দিয়েছে সেই কর্মসূচিতে জনগণের সমর্থন রয়েছে।

আর একটা হচ্ছে, দেশের জনগণ ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামী দিনে এই সরকারের পতনের আন্দোলনে জনগণের যে সমর্থন থাকবে অংশগ্রহণ করবে। সেটাই সুস্পষ্ট হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এই বিভাগের আরো খবর